এই পোস্টটি 256 বার দেখা হয়েছে
নেপালের কাঠমুণ্ডুতে অবস্থিত বুদ্ধনীলকণ্ঠ মন্দির সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি অত্যন্ত কৌতুহল উদ্দীপক দর্শনীয় স্থান। এ মন্দিরটি দর্শনার্থীদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষনীয় কেননা এখানে হাজার বছরের পুরানো ৫ ফুট দীর্ঘ একটি বিষ্ণুমূর্তি রয়েছে। কথিত আছে, অনেক বছর আগে দুই কৃষান-কৃষানী (স্বামী-স্ত্রী) এই স্থানটিতে একদিন জমি চাষ করছিল । এক পর্যায়ে কৃষকের লাঙ্গলের আঘাত লাগে মাটির নিচে শায়িত ঐ বিষ্ণুমূর্তির শরীরে। ফলে তৎক্ষণাৎ মাটির নিচ থেকে রক্ত বেয়ে উপরে চলে আসে। ফলশ্রুতিতে এক পর্যায়ে মাটির নিচ থেকে এই বিষ্ণুমূর্তি অত্যন্ত যত্নসহকারে তুলে আনে। তখন থেকেই এই পবিত্র বিষ্ণুমূর্তি সারা নেপাল জুড়ে জনসাধারণের কাছে পূজিত হয়ে আসছে। ১৯৮৬-৮৭ সালের দিকে ঐ স্থানের রক্ষণাবেক্ষণ ও সমস্ত দায়ভার ইস্কনকে দেওয়া হয়।
ফলশ্রুতিতে বুদ্ধনীলকন্ঠের পাশেই ইস্কন একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। নেপালে দর্শনার্থীরা বুদ্ধনীলকন্ঠ মন্দির পরিদর্শনে আসলে তারা অপূর্ব মনোহর ইস্কনের এ মন্দিরটিও পরিদর্শনের সুযোগ পাই । বিষ্ণু মূর্তিটিতে ভগবান শ্রীবিষ্ণু তার অনন্ত শেষের উপর শায়িত রয়েছে এবং এটি ১৩ মিটার দীর্ঘ জলাশয়ের উপর ভাসমান আঙ্গিকে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই মূর্তিটি প্রায় সপ্তম বা অষ্টম শতাব্দীর দিকে অর্থাৎ লিচাবী সময়কালীন সময়েই খোদাই করা হয়েছিল। মন্দিরটিতে বছরের আকর্ষনীয় উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয় অক্টোবরের মাঝামাঝি কিংবা নভেম্বরের প্রথম দিকে হরিবন্ধিনি একাদশীর দিনে। কেননা ভগবান শ্রীবিষ্ণু ঐ সময় কারণ সাগরে ঘুমন্ত অবস্থা থেকে জেগে উঠে। উক্ত অনুষ্ঠানে হাজারো লোকের সমাগম ঘটে। ঐ বিষ্ণু মূর্তিটি ছাড়াও নেপালে আরো ২টি বিষ্ণু মূর্তি রয়েছে যার একটি বালাজু গার্ডেনে এবং অন্যটি কাঠমুন্ডু শহরের রয়েল প্যালেসে রয়েছে। কিন্তু ঐ বিগ্রহগুলি কোন দর্শনার্থী দর্শন করতে পারে না। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এই যে, বুদ্ধনীলকন্ঠ মন্দিরে অবস্থিত বিষ্ণুমূর্তিটি নেপালের কোন রাজা দর্শন করতে পারে না। কেননা কথিত আছে যদি নেপালের রাজা যদি এই বিষ্ণু মূর্তি দর্শন করে তবে তিনি তৎক্ষনাৎ মৃত্যুবরণ করবেন। ইস্কন দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য এখানে বিভিন্ন অতিথিশালা সহ মনোরম একটি পারমার্থিক পরিবেশ গড়ে তুলেছেন। আপনিও সুযোগ পেলে নেপালের এই মন্দিরে সেবিত দূর্লভ বিষ্ণু মূর্তিটি দর্শন করে আসতে পারেন। হরে কৃষ্ণ।