ধূপের ভক্তি সুবাস

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২১ | ৭:০৫ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৭ আগস্ট ২০২১ | ৭:০৫ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 264 বার দেখা হয়েছে

ধূপের ভক্তি সুবাস

কৃষ্ণ সমস্ত সুবাসের উৎস এবং সে সুবাস তাঁকে নিবেদনের মাধ্যমে ভক্ত ও ভগবান উভয়ই আনন্দ আস্বাদন করেন।

উর্মিলা দেবী দাসী

ভক্তিযোগের অনুশীলনে ধূপধূনোর সুবাস কতটা কার্যকরী

সুমধুর সুবাস লাভের বাসনায় বিশ্বের পারফিউম ইন্ডাস্ট্রিগুলো প্রতি বছর প্রায় সাতাশ বিলিয়ন অর্থ ব্যয় করে। তারা সাধারণত বিভিন্ন সাবান, লন্ড্রি ডিটারজেন্ট বা পরিষ্কারকগুলোতে এবং বিভিন্ন গৃহস্থালীর পরিষ্কারকের মধ্যে এই সুবাসগুলো সংযুক্তি করেন। শুধু কি তাই, যেখানে জিহ্বা খাবারের মিষ্টতা, কটুতা, লবণাক্ততা ও তিক্ততা আস্বাদন করে সেখানে এখন নতুন সংযোজন হয়েছে খাবারের সুবাস। যদিও আমাদের মধ্যে সুবাস লাভের সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু সেগুলো আমাদেরকে শুদ্ধতা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে ন্যূনতম প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে। এতে আশ্চর্য হওয়া উচিত নয়। কৃষ্ণ, যিনি সমস্ত আনন্দের আধার, তিনি গীতায় বলছেন—’আমিই হলাম পৃথিবীর সুবাস’। উল্লেখ্য, পৃথিবীর সমস্ত খাদ্য, পুষ্প, পত্র ও প্রাণরসের সুবাসের উৎস কৃষ্ণ। কৃষ্ণের স্বয়ং চিন্ময় সুবাস সম্পর্কে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, “যিনি নিজের অষ্ট-অঙ্গে অষ্টপদ্ম-যুক্ত এবং কর্পূর-যুক্ত পদ্ম-গন্ধ প্রচার করেন, এবং যিনি-মৃগনাভি-কপূর-চন্দন-অগুরু সুগন্ধের দ্বারা চর্চিত, হে সখি! সেই মদনমোহন আমার নাসাস্পৃহা বৃদ্ধি করছে।” (চৈ.চ.অন্ত্য-১৯/৯১) যেভাবে রসায়ন বিজ্ঞানীরা পুষ্প থেকে সুবাসিত উপাদান পৃথক করতে পারে। ঠিক তেমনি আমরা জীবন থেকে পারমার্থিক প্রগতির সারকে পৃথকীভূত করতে পারি। প্রেমভক্তি সহকারে সমস্ত আনন্দের উৎস কৃষ্ণের প্রীতিবিধানের মাধ্যমে আমাদের সুখের অনুসন্ধানের জন্য এটি করতে পারি। কৃষ্ণসেবার অংশ হল আমাদের সামর্থ্য অনুসারে সবকিছু তাঁর সেবার উদ্দেশ্যে নিবেদন করা। যেহেতু সবকিছুই তাঁরই শক্তির প্রকাশ, তাই আমরা তাঁরই শক্তি তাঁর কাছে স্নেহভরে নিবেদন করি কৃষ্ণ এর মাধ্যমে প্রসন্ন হন। যেরকম কোনো সন্তান তার পিতা-মাতা থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে তাদের জন্য কোনো উপহার ক্রয় করে নিবেদন করার ফলে পিতা-মাতা আনন্দিত হন। অতএব, যদিও যিনি সমস্ত সুবাসের উৎস তাঁর কাছে কোনো সুবাস নিবেদনের ব্যাপারটি ভিত্তিহীন মনে হয়, কিন্তু কৃষ্ণ এরকম নিবেদনের মাধ্যমে প্রেমভাব আস্বাদন করেন এবং যে ভক্ত এই রকম সুবাস নিবেদন করেন তিনি কৃষ্ণের আনন্দ আস্বাদন করেন। প্রকৃতপক্ষে কৃষ্ণ স্বয়ং বলেছেন,
“অভক্তের দ্বারা অর্পিত ঐশ্বর্যমণ্ডিত উপহারও আমাকে সন্তুষ্ট করে না। কিন্তু, আমার প্রেমময়ী ভক্ত কর্তৃক অর্পিত নগণ্য কিছুর দ্বারা আমি সন্তুষ্ট হই, আর যখন সুন্দর সুগন্ধী তৈল, ধূপ, পুষ্প এবং উপাদেয় খাদ্য বস্তু আমাকে ভালোবেসে অর্পণ করা হয় তখন আমি অবশ্যই অত্যন্ত প্রীত হই।” (শ্রীমদ্ভাগবত ১১/২৭/১৮)

কৃষ্ণের গৃহ থেকেই শুরু

যখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এই পৃথিবীতে লীলাবিলাস করছিলেন, সে সময়ে অতিথির আগমনে কিংবা গৃহে প্রত্যাবর্তনের সময় অভ্যর্থনা জানানোর অংশ হিসেবে এই ধূপধূনো ব্যবহৃত হতো।
প্রতিটি আবাসগুলোর দ্বারে দ্বারে দধি, অভগ্ন ফল, ইক্ষু এবং জলপূর্ণ কলস প্রভৃতি মাঙ্গলিক সামগ্রী রাখা হয়েছিল, এবং পূজার উপকরণ, ধূপ এবং দীপ প্রভৃতির দ্বারা সুশোভিত করা হয়েছিল। (শ্রীমদ্ভাগবত ১/১১/১৫)
ধূপকাঠি বা ধূপধূনোর আঘ্রান বা সুবাস বৃন্দাবনে কৃষ্ণের নিবাসস্থলীর ও দ্বারকায় তাঁর শহরের সমগ্র এলাকা জুড়ে সুবাসিত হতো। বৈদিক সাহিত্যে বলা হয়েছে যে, এ ধূপধূনোর সুবাস প্রকাশিত হতো কৃষ্ণের আবাসস্থলীর জানালার জাফারি বা ঝাঁঝারি (Lattice) আকৃতির নকশাগুলো থেকে।
ভালোবাসা মানে হলো প্রিয়জনকে সর্বোচ্চ সুন্দর মানসম্মত বিষয় নিবেদন করা এবং এক্ষেত্রে সবচেয়ে মানসম্মত ধূপধূনো (Incense) তৈরি করা যায় প্রাকৃতিক রজন (Resins) কাষ্ঠ, বীজ, পুষ্প ও তৈল থেকে। উচ্চ মানের প্রাকৃতিক ধূপধূনো তৈরি করা হলে প্রচুর ধূম নির্গত হয় যার সুবাস অনেকক্ষণ কক্ষের মধ্যে বিচরণ করে। আজকাল যে ধূপধূনো পাওয়া যায়, তা ততটা মানসম্মত হয় না, কিন্তু আমরা নিশ্চিত করতে পারি, যত্ন সহকারে আমরা ভগবানকে যা নিবেদন করি তা প্রাকৃতিক, সাস্থ্যসম্মত ও বিবিধ মনোরম সুবাসে পরিপূর্ণ। বৈদিক সাহিত্যে সুবাস সম্পর্কে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে চন্দন, অগুরু, কর্পূর, কস্তুরী, পদ্ম ও গোলাপ। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু চতুসাম নামে একটি মনোরম সুবাসের সমন্বয়ের কথা উল্লেখ করেছেনঃ
“সনাতন শ্রীকৃষ্ণের পার্ষদ। তাই তাঁর দেহে কোনো দুর্গন্ধ থাকতে পারে না। প্রথম দিন যখন আমি তাকে আলিঙ্গন করেছিলাম, তখন আমি চন্দন, অগুরু, কস্তুরী এবং কর্পূরের গন্ধ পেয়েছিলাম । (চৈ.চ.অন্ত্য-৪/১৯৭)
প্রতিটি তালিকায় কৃষ্ণকে ধূপ নিবেদনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ধূপ হলো ভগবানের এবং তার প্রতিনিধি ভক্তদের অর্জনের জন্য একটি অংশ যার কথা বিশ্বের ঐতিহ্যের অনেক শাস্ত্রে উল্লেখিত আছে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ যখন যীশু খ্ৰীষ্ট আবির্ভূত হয়েছিলেন তখন বিজ্ঞ ব্যক্তিরা শিশু যীশু খ্রীষ্টের জন্য ধূপধূনো ও গন্ধযুক্ত এক প্রকার বৃক্ষজ আঠাবিশেষ নিয়ে এসেছিলেন।
অৰ্চন পদ্ধতিতে বর্ণিত আছে, ধূপধূনো ভগবানের বেদির মত একটি পবিত্র স্থানে রাখা হয়। বিগ্রহ বালি, মাটি, কাষ্ঠ কিংবা পাথর দ্বারা তৈরি হতে পারে, মনের মাধ্যমে ভগবানের বিগ্রহ তৈরি করা যেতে পারে কিংবা অলংকার, ধাতু বা রং দিয়ে ভগবানের বিগ্রহ তৈরি করতে পারে। ভগবানের এ সমস্ত রূপের মধ্যে সমান পারমার্থিক মূল্য নিহিত রয়েছে।
শ্রীল প্রভুপাদ ব্যাখ্যা করেছেন যে, এই প্রকার রূপ যদিও আপাতদৃষ্টিতে ধাতু দিয়ে তৈরি বলে প্রতিভাত হয়, কিন্তু যখন শাস্ত্র নির্দেশনা অনুসারে তা প্রস্তুত ও অভিষেক করা হয় তখন তা স্বয়ং কৃষ্ণই ।
এই বিগ্রহসমূহকে বলা হয় অর্চামূর্তি, বা ভগবানের শ্রীমূর্তি যা সাধারণ মানুষ সহজেই উপলব্ধি করতে পারে। ভগবান আমাদের জড়েন্দ্রিয়ের অতীত। আমাদের জড় চক্ষু দিয়ে তাঁকে দর্শন করা যায় না, তেমনই আমাদের কর্ণ দিয়ে তাঁকে শ্রবণ করা যায় না। আমরা যে অনুপাতে ভগবানের সেবায় প্রবেশ করি অথবা যে অনুপাতে আমাদের জীবন পাপকর্ম থেকে মুক্ত হয়েছে, সেই অনুপাতে আমরা ভগবানকে উপলব্ধি করতে পারি। কিন্তু যদিও আমরা পাপমুক্ত হইনি, তবুও ভগবান এতই কৃপাময় যে, তিনি মন্দিরে তাঁর অর্চামূর্তিরূপে তাঁকে দর্শন করার সুযোগ আমাদের দিয়েছেন। ভগবান সর্বশক্তিমান, এবং তাই তাঁর অর্চামূর্তিরূপে তিনি আমাদের সেবা গ্রহণ করতে পারেন। অতএব মূর্খের মতো মন্দিরে ভগবানের অৰ্চাবিগ্রহকে প্রতিমা বলে মনে করা উচিত নয়। এই প্রকার অর্চামূর্তি প্রতিমা না, তিনি হচ্ছেন ভগবান স্বয়ং এবং যে অনুপাতে মানুষ পাপ থেকে মুক্ত হয়, সেই অনুপাতে তিনি অর্চামূর্তির মর্ম হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন। তাই শুদ্ধ ভক্তের নির্দেশ সর্বদাই প্রয়োজন ।
ভারতবর্ষে সারা দেশ জুড়ে শত সহস্র তীর্থস্থান রয়েছে, এবং ঐতিহ্য অনুসারে সাধারণ মানুষ সারা বছর জুড়ে সমস্ত ঋতুতে এই সকল তীর্থস্থানগুলিতে যান। বিভিন্ন তীর্থে ভগবানের যে সমস্ত অর্চামূর্তিগুলি রয়েছে তার উল্লেখ এখানে করা হল। ভগবান মথুরায় (শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থানে) রয়েছেন আদিকেশবরূপে; পুরীতে তিনি শ্রীজগন্নাথরূপে বিরাজমান; মন্দর পর্বতে তিনি মধুসূদনরূপে বিরাজ করছেন। আনন্দারণ্যে তিনি বাসুদেব, পদ্মনাভ ও জনার্দনরূপে বিরাজমান; বিষ্ণুকাঞ্চীতে তিনি বিষ্ণুরূপে; এবং মায়াপুরে তিনি হরিরূপে বিরাজমান। সারা ব্রহ্মাণ্ডে ভগবানের এই রকম লক্ষ কোটি অর্চাবিগ্রহ রয়েছে। এই সমস্ত অর্চামূতির তত্ত্ব সংক্ষেপে বিশ্লেষণ করে চৈতন্যচরিতামৃতে বলা হয়েছে-

সর্বত্র প্রকাশ তাঁর-ভক্তে সুখ দিতে
জগতের অধর্ম নাশি’ ধৰ্ম স্থাপিতে ৷।

“ভগবান এভাবে নিজেকে ব্রহ্মাণ্ডের সর্বত্র প্রকাশ করেছেন কেবল তার ভক্তদের আনন্দ দান করার জন্য, সাধারণ মানুষদের পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য, এবং সারা পৃথিবী জুড়ে ধর্ম স্থাপন করার জন্য।” (শ্রীমদ্ভাগবত ৩/১/১৭)
ঐতিহ্যবাহী বৈষ্ণব অনুশীলন অনুসারে, শ্রীল প্রভুপাদ ইস্কনের জন্য আদর্শ পন্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন যে, শুধুমাত্র যে সমস্ত ভক্ত দ্বিতীয় দীক্ষা তথা ব্রাহ্মণ দীক্ষা লাভ করেছেন তারাই একমাত্র মন্দিরের বেদীতে অবস্থিত বিগ্রহের সরাসরি পূজা অর্চনা করতে পারবেন। কিন্তু গৃহে কেউ সরল পূজা অর্চনা সম্পাদন করতে পারে। কৃষ্ণের প্রতি ধূপধূনো নিবেদনের ক্ষেত্রে, ডান হাত দিয়ে ধূপকাঠি ধরে রেখে বিগ্রহের চারদিকে ঘড়ির কাটার দিকে ঘোরাতে হয়। তখন একই সাথে বাম হাত দিয়ে ঘন্টা বাজাতে হবে। ঐসময় অন্তত একবার বলতে হবে, “কৃষ্ণ, তোমাকে এই ধূপ নিবেদন করছি।” (সংস্কৃত শ্লোকানুসারে, এস ধূপঃ, ক্লীম কৃষ্ণায় নমঃ) ভক্তিরসামৃতসিন্ধু অনুসারে, এভাবে ধূপ নিবেদনের পর ভগবানকে একটি পুষ্পও নিবেদন করা উচিত।
আমরা এটাও উল্লেখ করতে পারি যে, যখন কৃষ্ণের রূপ মনের মধ্যে আবির্ভূত হয় তখন মানসিকভাবেও ভগবানকে এ ধূপ নিবেদন করা যেতে পারে। এমনকি শারীরিকভাবে যখন কেউ ধূপ নিবেদন করে, তখন তার মন সে নিবেদনের মধ্যে পূর্ণভাবে নিবিষ্ট করতে হবে। ভগবানের প্রতি নিবেদন হওয়া উচিত শরীর, মন ও বাক্য সহকারে অর্থাৎ কায়মনোবাক্যে।
ভক্তিযোগী সর্বদা কৃষ্ণের সুখের ওপর নিজেকে নিবদ্ধ করে এভাবে কৃষ্ণের আনন্দ বিধানের মাধ্যমে তিনি আনন্দ লাভ করেন। ধূপ নিবেদনের পর, আমরা তখন সেই প্রসাদ আস্বাদন করি। কিংবা গৃহে বা মন্দিরে কৃষ্ণের কৃপারূপ যে সুমধুর সুবাসে পরিপূর্ণ হয়েছে তা আমরা আস্বাদন করি। ভক্তিরসামৃতসিন্ধু গ্রন্থে শ্রীল প্রভুপাদ এ সম্পর্কে হরিভক্তি-সুধোদয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, “কোনো বিশেষ ঔষধি আঘ্রাণ করার ফলে যেমন সাপের বিষ কেটে যায়, তেমনই ভগবানকে অর্পিত সুগন্ধি পুষ্প আঘ্রাণ করার ফলে জড় বিষয়ের বিষময় প্রতিক্রিয়া থেকে মুক্ত হওয়া যায়।” জঙ্গলে এক রকম ওষধি পাওয়া যায়, যা সাপুড়েরা সর্প দংশনে অচেতন মানুষের চেতনা ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবহার করেন।


ধূপ হলো ভগবানের এবং তার প্রতিনিধি ভক্তদের অর্চনের জন্য একটি অংশ যার কথা বিশ্বের ঐতিহ্যের অনেক শাস্ত্রে উল্লেখিত আছে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ যখন যীশু খ্রীষ্ট আবির্ভূত হয়েছিলেন তখন বিজ্ঞ ব্যক্তিরা শিশু যীশু খ্রীষ্টের জন্য ধূপধূনো ও গন্ধযুক্ত এক প্রকার বৃক্ষজ আঠাবিশেষ নিয়ে এসেছিলেন।


কেবলমাত্র সেই ওষধি আঘ্রাণ করার ফলে সাপের বিষের প্রতিক্রিয়া তৎক্ষণাৎ নষ্ট হয়ে যায়। তেমনই, কোনো মানুষ যখন মন্দিরে এসে ভগবানকে নিবেদিত সুগন্ধি পুষ্প ও ধূপ আঘ্রাণ করেন, তখন তিনি সমস্ত জড় কলুষ থেকে মুক্ত হন।
হরেকৃষ্ণ আন্দোলনের ভক্তদের সঙ্গে ধূপ নিবিড়ভাবে জড়িত। এর কারণ সম্ভবত ইস্কনের প্রথম দিকের ইতিহাসে ভক্তরা ইস্কন মন্দির চালাতেন Spiritual Sky নামে একটি ব্যবসার মাধ্যমে, যা উৎপাদন করতো সুগন্ধী ধূপ ও সুগন্ধী তৈল। অথবা, অন্য একটি কারণ হতে পারে যে, আজকাল এতিটি ইস্কন কেন্দ্রে যখন পরিদর্শকরা যান তখন তারা বলে এ ধূপের আঘ্রাণ, রান্নায় ব্যবহৃত বিশুদ্ধ ঘি এর আঘ্রাণ কত মধুর যা একটি চিন্ময় বা অপ্রাকৃত পরিবেশের সৃষ্টি করে।
আমার দিনের সবচেয়ে প্রিয় সময়টি হলো যখন আমি বেদির সম্মুখে বসে কৃষ্ণকে সামান্য কিছু বস্তু যেমন ধূপ, পুষ্প ও ফল নিবেদন করি। যখন আমি ভগবানের সম্মুখে সর্বোচ্চ মানের ধূপ রাখি তখন আমার অনুভূত হয় যে, সমগ্র কক্ষ এবং আমার হৃদয় পরিশুদ্ধ হয়ে উঠছে এবং প্রসন্নতায় ভরে গেছে।

উর্মিলা দেবী দাসী এবং তাঁর পরিবার ক্যারোলিনাতে একটি বালক-বালিকা বিদ্যালয় পরিচালনা করেন এবং তিনি Vaikuntha Choldren: a guide to Krishna Consious Education for Children গ্রন্থের লেখক । 


 

জানুয়ারি-মার্চ ২০১৫ ব্যাক টু গডহেড
সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।