এই পোস্টটি 202 বার দেখা হয়েছে
এই পৃথিবীত জলচর প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাণীটির নাম কি? এই প্রশ্নের উত্তরটি বোধহয় সবারই জানা। যে প্রাণীটি বিশাল বিশাল মাছকেও গলাধঃকরণ করে । যে প্রাণীটি মাঝে মাঝে বড় বড় জাহাজেরও বিপদের কারণ হতে পারে কিংবা মানুষও যেখানে সেই প্রাণীটির ভয় বিশাল মহাসাগরে নিজেকে নিরাপদ বলে মনে করতে ভয় পায় সেই প্রাণীটি হল ‘তিমি’। বিশাল মহাসাগরে যার রয়েছে একছত্র রাজত্ব। যার ভয়ে ভীত থাকে সমুদ্রে বিচরণরত অন্যান্য মৎস্যকুল। যার বিশাল আকৃতির পাকস্থলীতে প্রতিদিন টন টন খাদ্য জমা পরে সেই প্রাণীটি কতটা বিশাল হতে পারে তা বোধহয় সবারই অজানা নেই। কিন্তু অজানা রয়েছে এমন একটি প্রাণীর কথা যে প্রাণীটি তিমি মাছ থেকেও বিশাল। এমনকি যে প্রাণীটি তিমি মাছকেও নিমিষে গলাধঃকরণ করতে পারে। তথ্যটি শুনে পাঠকদের নিশ্চিত চমকে উঠার কথা। বোধহয় প্রশ্নও উঠতে পারে এমন প্রাণীর খবর তো পৃথিবীর ইতিহাসেও বোধহয় অজানা তাহলে এ প্রাণীর অস্থিত্ব কিভাবে সম্ভব? কিন্তু বৈদিক শাস্ত্র মতে এই পৃথিবীতে একসময় তিমির চেয়েও বিশাল একটি জলচর প্রাণীর অস্থিত্ব ছিল, যেটি চৈতন্যচরিতামৃত, শ্রীমদ্ভাগবত, রামায়ণ ও মহাভারত সহ অন্যান্য বৈদিক শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে। প্রাণীটির নাম ‘তিমিঙ্গিল’ সংস্কৃত শব্দ তিমিঙ্গিলের পুরো অর্থ হল, তিমিকে যে গিলে ফেলে তাকেই ‘তিমিঙ্গিল’ বলা হয়। তিমিকে যে গিলতে পারে, তাও আবার (ভাঃ-১২/৯/১৬) “ক্ষুধায় এবং তৃষ্ণায় পীড়িত হয়ে, কদাকার মকর এবং তিমিঙ্গিল মাছের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এবং তরঙ্গ ও বায়ুপ্রবাহের দ্বারা পুনঃ পুনঃ আহত হয়ে অসীম অন্ধকারে পতিত সেই ঋষি লক্ষ্যহীনভাবে পরিভ্রমণ করেছিলেন। যতই তিনি পরিশ্রমে নিঃশেষিত হচ্ছিলেন, ততই তিনি দিকভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং পৃথিবী থেকে আকাশকে পৃথক করতে পারছিলেন না।”এখানে স্পষ্টতই প্রমাণিত হয় যে, এই পৃথিবীতে তিমিঙ্গিল নামে এক বিশাল আকৃতির মাছের অস্থিত্ব ছিল । রামায়নে ভগবান রামচন্দ্র এবং রাবনের রাজত্ব লঙ্কার মধ্যবর্তী সাগরে বিচরণরত তিমিঙ্গিল মাছ সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। “যখন চন্দ্ৰ উদিত হয়, মহাসাগরের জলে চাঁদের আলো প্রতিফলিত হয়। মহাসাগরটি বিশাল বিশাল কুমিরে পরিপূর্ণ যারা বায়ুর মত দ্রুত গতিতে ধাবমান। যেখানে তিমি এবং তিমিঙ্গিলারাও বসবাস করে।” (রামায়ন, যুদ্ধ-কাণ্ড ৪ / ১১৪) একইভাবে মহাভারতে উল্লেখ করা হয়েছে তিমিঙ্গিলা মহাসাগরের অত্যন্ত গভীরে অন্যান্য সামুদ্রিক বিশাল বিশাল সৃষ্টির সঙ্গে বসবাস করে। “তিমিঙ্গিলা, কাছিম, তিমি-তিমিঙ্গিলারা এবং মকরগণ অবস্থান করে যেমনটি জলের মধ্যে বিরাট পাথরকে ফেললে গভীর জলে নিপতিত হয়।” (মহাভারত- বনপর্ব ১৬৮.৩) সুশ্রুত সংহিতায়ও এ মাছ সম্পর্কে বলতে গিয়ে সমুদ্রে বিরল প্রজাতির অন্যান্য অনেক মৎস্য সম্পর্কেও উল্লেখ কর হয়েছে। “তিমি, তিমিঙ্গিলা, কুলিমা, পাক মৎস্য, নিরুলারু, নন্দি-ভরলকা, মকর গর্গক, চন্ডক, মহা-মিনা এবং রাজিভ ইত্যাদি মহাসাগরের মৎস্যদের পরিবার” (সুসুত সংহিতা, অধ্যায়-৪৫) এভাবে বৈদিক শাস্ত্রের আরো অনেক উদ্ধৃতি রয়েছে এ বিশাল মৎস্য সম্পর্কে। এখন প্রশ্ন হল যদি এ মৎস্য পৃথিবীতে থেকেই থাকে তবে নিশ্চয়ই এর ফসিল জাতীয় কিছু কিংবা বিজ্ঞানীদের এ মৎস্য সম্পর্কে অভিমত থাকার কথা। বিজ্ঞান বিষয়ে কি বলছে? আর তাই আগামী সংখ্যায় শাস্ত্র এবং বিজ্ঞানীদের অভিমত নিয়ে আরো চমকপ্রদ তথ্য তুলে ধরা হবে। আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট পরিদর্শন করতে পারেন। ‘ডাইনোসরের কি অস্থিত্ব এই শিরোনামে প্রবন্ধ থেকে শ্রীল প্রভুপাদের সঙ্গে এক বিস্তৃত আলোচনায় তিমিঙ্গিল সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য তুলে হয়েছে।
চৈতন্য সন্দেশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন :https://play.google.com/store/apps/details?id=com.differentcoder.csbtg