ঝগড়া প্রতিরোধ

প্রকাশ: ৬ অক্টোবর ২০২৪ | ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৬ অক্টোবর ২০২৪ | ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 48 বার দেখা হয়েছে

ঝগড়া প্রতিরোধ

১৪টি মেজর জেতা টাইগার উডসকে বলা হয় গল্ফের কিংবদন্তি। উডসই  সমস্ত ক্রীড়া জগতের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। এখনও র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষে তার অবস্থান। তবে সাম্প্রতিক নারী কেলেঙ্কারীর মত বিশ্রী কারণে তার শীর্ষত্ব অনেকটাই নড়বড়ে। এর কারণ হিসেবে সবাই বলছে সাংসারিক জীবনে তার স্ত্রীর সাথে সাময়িক দ্বন্দ্ব। এ সাময়িক দ্বন্দ্ব বা ঝগড়া এতটাই স্থায়ী রূপ নিল যে, শেষ পর্যন্ত টাইগার উডসের সংসারই ভেঙ্গে গেল। এখন ডিভোর্সের মাধ্যমে তারা দু’জন একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন। গত কিছুদিন বিশ্বের সবক’টি সংবাদমাধ্যমে আলোচিত খবর ছিল টাইগার উডসের জীবনে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা। মাতাল হয়ে বেপরোয়া অবস্থায় গাড়ী চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা আর তখন ধরা পরে টাইগার উডসের সঙ্গে অন্য এক নারীর অবৈধ সম্পর্কের কথা। ঝগড়ার সূত্রপাত সেখান থেকেই।

এভাবে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি স্থানে, প্রতিটি দেশে, প্রতিটি ঘরে ঘরে ঝগড়া বা দ্বন্দ্ব একটা স্বাভাবিক ব্যাপার যা প্রতিটি মুহূর্তেই আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যদি আপনি ঝগড়ার শ্রেণীবিভাগ চান তবে সবার উপরে থাকবে পারিবারিক বা সাংসারিক ঝগড়া। তার পরের অবস্থানটি অবশ্যই হবে দেশে দেশে ঝগড়া। তবে সব কটি ঝগড়ার সঙ্গে জড়িত মানসিকভাবে নিজের মধ্যে দ্বন্দ্ব।

মানসিক দ্বন্দ্ব : লোকেদের মন খুবই বিরক্ত। প্রতিনিয়ত নিজের মধ্যে ভাল আর মন্দের মধ্যে ঝগড়া হয়। কোনটা করা উচিত কোনটা নয় এ নিয়ে দ্বন্দ্ব। লোকেরাও প্রতনিয়ত খুবই হতাশ এবং কোন জাগতিক সমাধানই তাদেরকে এ হতাশা থেকে মুক্তি দিতে পারছে না। যত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে সেগুলোর বেশিরভাগই উচ্চবিত্ত শ্রেণীর লোকদের মাঝেই।

পারিবারিক ঝগড়া: ফেডেরাল পরিসংখ্যান মতে, সারাবিশ্বে ৬৭% ডিভোর্স হয় বিয়ের আংটি পড়ার তিন বছরের মধ্যেই। সেজন্য প্রচলিত আছে-“প্রথমে বিয়ের আংটি, তারপর কষ্ট।” পারিবারিক ঝগড়া বা দ্বন্দ্বের কারণে মানুষ এখন খুবই বিরক্ত এবং হতাশ। মা- বাবাদের এ অবস্থা দেখে শিশুরাই মানসিকভাবে নির্যাতনের স্বীকার হয়। সে ভিতরে ভিতরে মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। যখন সে দেখে রাতের পর রাত দিনের পর দিন তার মা-বাবা যেভাবে ঝগড়া বা হাতাহাতি করে চলেছে তখন তার মনে ঝড় বয়ে যায় এবং ঐসব প্রতিনিয়ত চিন্তা করার কারণে ভুক্তভোগীর মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় যার ফলে সে মানসিকভাবে অসুস্থতা বোধ করে।

হিটলার যখন ছোট ছিলেন তখন তাকে অনেক সমস্যা এবং নির্যাতন সইতে হয়েছিল। আর তখন সে বড় হলে সেও এই বিশ্বের উপর একই রকম আচরণ করেছিল। ক্ষমতা যখন ভুল হাতে পড়ে তখন তা খুবই ভয়ানক আকার ধারণ করে। ফেডেরাল পরিসংখ্যানে এটাও বলা হয় যে, আমেরিকায় ৯২% ছেলে মেয়ে বড় হয় ডিভোর্স অথবা ভেঙ্গে যাওয়া কোন পরিবার থেকে। ৯৭% অপরাধী জেলে যায় যারা এসেছে ভাঙ্গন ধরা বৈবাহিক সম্পর্ক থেকে।

বাংলাদেশ সহ উপমহাদেশীয় দেশগুলোতেও সাংসারিক ঝগড়া বা দ্বন্দ্বের ফলাফল ধীরে ধীরে ভয়ানক পরিস্থিতিতে রূপ নিচ্ছে। এখন তো অহরহ ঘটে চলেছে যৌতুকের জন্য স্বামী- স্ত্রীর ঝগড়া এবং পরস্পরকে হত্যা। গত কিছুদিন আগে এক পরিসংখ্যান দাবী তুলেছে বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবনতা বেড়েছে বিশেষত সাংসারিক নারী-পুরুষের মধ্যে। তারা এতটাই হতাশ যে, আত্মহত্যার সময় তাদের শিশু সন্তানদের নিয়েই আত্মহত্যা করছে।

দেশে দেশে দ্বন্দ্ব: দেশে দেশে দ্বন্দ্ব মানেই এখন যুদ্ধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হচ্ছে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ। এ দুটি যুদ্ধের পরেই কোরিয়ান যুদ্ধ এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধ। এরপর ইরাক যুদ্ধ এবং পরবর্তীতে আরো কিছু যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। শুধুমাত্র এই জাতিগুলোতেই গত ২০০ বছরের মধ্যে অনেকগুলো যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। বর্তমানের শক্তিশালী রাষ্ট্র আমেরিকার সঙ্গে এ ধরনের যুদ্ধগুলো সংঘটিত হয়। এসব যুদ্ধে হাজার হাজার লোকের প্রাণহানী ঘটে। বর্তমান বিশ্বে এ ধরনের আরো যুদ্ধ সংঘটিত হতে পারে। তাই ঝগড়ার আরেক রূপ হল দেশে দেশে এই প্রকার যুদ্ধ।

এসব থেকে পরিত্রানের উপায় সম্পর্কে আগামী সংখ্যা আলোচনা করা হবে। বৈদিক শাস্ত্রের সমাধান কি এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। (চলবে……)

হরে কৃষ্ণ ।


মাসিক চৈতন্য সন্দেশ , অক্টোবর – ২০১০ ইং 

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।