
মাধব স্মুলেন: দক্ষিণ আফ্রিকার বৈষ্ণবী মন্ত্রণালয় আগস্টে বৈষ্ণবী সম্প্রদায়কে সম্মান ও সেবা করার উদ্দেশ্যে, কঠিন সময়ে কাউন্সেলিং, আধ্যাত্মিক সহায়তা এবং খাদ্য সহায়তা প্রদান করে আসছে। প্রতি আগস্ট মাস, দক্ষিণ আফ্রিকা দেশটি মহিলাদের মাস হিসেবেই পরিচিত। এসময় ২০ সহস্রাধিক নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় যারা বর্ণবিদ্বেষের সময় সমানাধিকারের জন্য ৯ আগস্ট, ১৯৫৬ সালে ইউনিয়ন ভবনে গিয়েছিল। তাই, ৯ আগস্ট নিজেই জাতীয় নারী দিবস হিসেবে চিহ্নিত এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় সেদিন সরকারি ছুটি। এক দশকেরও অধিক সময় ধরে, দক্ষিণ আফ্রিকায় ইস্্কন বৈষ্ণবী সম্প্রদায়ের জন্য আগস্টে এই কর্মসূচি পালন করে আসছে। যে বছর জন্মাষ্টমীর আগের দিন নারী দিবস পড়েছিল তার পর থেকেই ডারবানের শ্রী শ্রী রাধানাথ মন্দির থেকে এটি শুরু হয়েছিল। ফলস্বরূপ কৃত কর্মসূচীটি ছিল এক দুর্দান্ত সাফল্য। যার বার্তা ছিল, “হরে কৃষ্ণ মন্দিরে নারী দিবসের চা চক্রের জন্য আমাদের সাথে যোগ দিন,” যা প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ জন নারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। “আমরা কৃষ্ণভাবনাকে খুব সহজ, আকর্ষণীয় উপায়ে উপস্থাপন করেছি,” বৈষ্ণবী মন্ত্রী কৃষ্ণাঙ্গী রাধে দাসী বলেছেন, “এই কর্মসূচিতে আমাদের সমাজে বৈষ্ণবীদের নিয়ে চিন্তনশীল আলোচনা সভা, মহিলাদের স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা সভা এবং একটি বৈদিক ফ্যাশন শো অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর থেকে প্রতি বছরই নারী দিবসে আমরা একটি বিস্তৃত কর্মসূচির আয়োজন করে থাকি।” করোনা মহামারীর কারণে প্রোগ্রামটি ভার্চুয়ালি হলো।
এবছরও, দক্ষিণ আফ্রিকায় মহামারীর তৃতীয় ঢেউ এবং সম্প্রতি সমাজে অস্থিরতা সত্ত্বেও, বৈষ্ণবী মন্ত্রণালয় বৈষ্ণবীদের বিভিন্ন উপায়ে প্রয়োজনীয় মানসিক এবং আধ্যাত্মিক সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গী রাধে বলেন, “যখন সবাই মহামারী এবং এখানেও দক্ষিণ আফ্রিকানরাও একই কারণে আক্রান্ত হয়েছে। আর নারীরাও বিভিন্নভাবে আক্রান্ত হয়েছে।” “যেমন, একজন মা হিসাবে, বাড়ি থেকে কাজ করা, বাচ্চাদের হোমস্কুলিং করানো, চাকরিচ্যুত হওয়া এবং সংসারটিকে টিকিয়ে রাখা।”
বৈষ্ণবীরাও কোভিড-১৯এ তাদের পরিবার এবং বন্ধুদের হারিয়েছেন। বৈষ্ণবী সম্প্রদায়ের মধ্যে মানসিক চাপ, আঘাত বা দুঃখের জন্য মানসিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বৈষ্ণবী মন্ত্রণালয় তাদের পেশাদার পরামর্শদাতাদের সহিত যুক্ত করেন, যেমন তন্মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গী রাধে নিজে, যিনি একজন প্রত্যায়িত এনএলপি কোচ।
যাদের আর্থিক প্রয়োজন তাদের জন্য, স্বেচ্ছাসেবীরা বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও প্রসাধন সামগ্রী সমৃদ্ধ ব্যাগ প্রদান করেছিল এবং আধ্যাত্মিক সহায়তার জন্য, একটি অনলাইন সঙ্গ এবং প্রার্থনা গ্রুপ ছিল। “যদি আপনার কিছু আধ্যাত্মিক সহায়তার প্রয়োজন হয় আপনি একজন বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করে তার সাথে আলাপ করতে পারেন,” তিনি আরো বলেন, “ব্যাপারটা হলো আমরা কিভাবে মহিলাদের সাহায্য করতে পারি? এবং কিভাবে নারীরা একে অপরকে সাহায্য করতে পারে?” তিনি ব্যাখ্যা করেন।
“প্রায় অনেকেই আমাদের সাথে যোগাযোগ করতো এবং বলতো, ‘আমি এই সময়ে দুঃখ পেয়েছি’ অথবা ‘আমি আমার প্রিয়জনকে হারিয়েছি,’ তখন অপরদিকে পরামর্শদাতারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করে বলেন, ‘আমি হলাম একজন যোগ প্রশিক্ষক এবং আমি একটি অনলাইন যোগ ক্লাস করাই’ অথবা ‘আমি একজন চিকিৎসিক এবং আমি সাহায্য করতে চাই।’ একজন মহিলা আমাকে ম্যাসেজ পাঠিয়ে বললেন, ‘আমি একজন পেশাদার নই এবং আমি গৃহিণী। কিন্তু আমি সত্যিই প্রার্থনা করা পূর্বক তাদের সাহায্য করতে চাই। তাই আমি এই কাজটা কিভাবে করতে পারি?’ এটা খুবই বিশেষ মুহূর্ত ছিল।”