এই পোস্টটি 903 বার দেখা হয়েছে
ব্রজ বিহারী দাস: ইংরেজি Movie spells, A vicality check থেকে সংগৃহিত:
সতের বছরের বিজয় শর্মা নিজের মাকে খুন করে কয়েক হাজার রুপি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনাটি ঠিক যেন ভারতীয় মুভি ‘বাস্তব’ ছবির একটি দৃশ্যপট, কয়েক বছর আগে মুম্বাইতে ঠিক এ ঘটনাটি ঘটেছিল। আমি ভাবলাম এটি হয়ত একটি দূর্ঘটনা। কিন্তু জয়মিত নামে ১৬ বছরের এক কিশোরের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক কথোপকথনে আমার এ ধারণা পাল্টে দেয়। তথাকথিত সিনেমার প্রভাবে যে যুবসমাজ কতটা প্রভাবিত হচ্ছে তা উপলব্দি হয়। কলেজ হোষ্টেলে আমার সাপ্তাহিক ক্লাসের পর জয়মিত আমাকে তার জীবনের লাভ স্টুরি বলেছিল। ‘গত তিন বছর ধরে আমি আমার মেয়ে বন্ধুটিকে ভালোবেসে আসছি। যদিও আমাদের মা-বাবারা আমাদের এ সম্পর্ক মেনে নিতে নারাজ। বরঞ্চ তারা এগুলো বাদ দিয়ে পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী হতে বলে। এ বাঁধা সত্ত্বেও আমরা খুব শ্রীঘই বিয়ে করার পরিকল্পনা করি।’ আমি বললাম। “অনেক টিনএজরা পরস্পর পরস্পরের প্রতি আকর্ষিত হয়। তা দেখে তুমি মোহিত হয়ে পড়েছ। তাছাড়া উভয়দিক থেকেই যেহেতু নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তাই তোমাদের বিয়ে করাটা অনৈতিক হবে। সে তখন প্রতিবাদ করল না। এটি সিরিয়াস রিলেশনসীপ এবং আমরা প্রয়োজনে কঠোর কিছু করতে প্রস্তুত।” তার আগ্রাসী ভাব এবং যৌবন উদ্দীপক ভাব আমাকে নীরব করে দিয়েছিল যেহেতু ভারতীয় সমাজের একটি বিশাল অংশ কোর্ট বিবাহ প্রসঙ্গে বেশ রক্ষণশীল এবং সামাজিক মানহানির ভয়ে ভীত। তাই মা-বাবারা ছেলেমেয়েদের এ ধরণের রোমান্সকে জোর আপত্তি জানায়। যদিও তার মা-বাবা এই ভয়ে ভীত ছিল। যদি সে তার প্রিয়জনকে নিয়ে কোন দূর্ঘটনা করে ফেলে। “তোমার ভবিষ্যত কি? কোন আয়ের ব্যবস্থা না করে কিভাবে জীবন ধারণ করবে? আমি তাকে বলেছিলাম। জয়মিত তখন সাধারণত বলিউড সিনেমাগুলোতে যা হয়ে থাকে সেই ধাঁচে বলল। “আমি হয় রেস্টুরেন্ট না হয় কোন গ্যাস স্টেশনে চাকরি নেব।’ যদিও জয়মিত একটি সম্ভ্রান্ত মারওয়ারী ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান ছিল। তবুও বাবা-মা মেনে না নিলে এরকম করবে বলে জানায়। “তুমি যা স্বপ্ন দেখছ তা এত সহজ নয়। জীবন অনেক কঠিন। তুমি এর জন্য তোমার মা-বাবার মনেও আঘাত করবে।” আমি অদূর ভবিষ্যতে যা যা হতে পারে তা ওকে বোঝাতে লাগলাম। কিন্তু আবেগপ্রবণ জয়মিত উল্টো আমাকেই বোঝাতে লাগল। তাকে না পেলে বরং নিজেকেই শেষ করে দেব।” মন্দির ফিরে যেতে যেতে ভাবছিলাম তথাকথিত বলিউড মুভিগুলোর একই গল্পের ধাঁচে জয়মিতের মত বাস্তব সংঘটিত হচ্ছে। তার মত অনেকেই সমাজের বিরুদ্ধে লড়ছে তার প্রিয়তমাকে জয় করার জন্য। ॥হরে কৃষ্ণ॥
(মাসিক চৈতন্য সন্দেশ এপ্রিল ২০১১ সালে প্রকাশিত)