‘চোর বলে, ‘ঐ’ চোর’

প্রকাশ: ৩ এপ্রিল ২০২৩ | ১২:১০ অপরাহ্ণ আপডেট: ৫ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 149 বার দেখা হয়েছে

‘চোর বলে, ‘ঐ’ চোর’
এক গ্রামে চোরের খুব উৎপাত ছিল। গ্রামের লোকেরা কিছুতেই চোর ধরতে পারছিল না। যার ঘরে চুরি হয়, ঘরের লোক জাগলেই চোর পারায়। লোকেরা ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার করলে অন্য লোকেরা দৌড়ে এসেও চোরের সন্ধান পায় না। -একদিন গ্রামপ্রধান যার যার ঘরে চুরি হয়েছিল তাদের প্রত্যেককে আলাদাভাবে ডাকলেন এবং তাদের প্রত্যেককেই একই রকম প্রশ্ন
করলেন, তোমাদের মধ্যে চোর ধরার জন্য কে কে উদ্যোগী ছিল? তারপর সবার উত্তরে জানা গেলো যে, পাশের গ্রামের একজন লোক যতবার চুরি ঘটেছে ততবার তাকেই দেখা গিয়েছিল। সেই লোকটি চোর ধরার জন্য ব্যস্ত হয়ে এদিক-ওদিক যাতায়াত করছিলো।
চৈতন্য সন্দেশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন
তারপর চৌকিদারকে নিয়োগ করা হলে ঐ ব্যক্তিটির গতিবিধি লক্ষ্য করতে। এবার চৌকিদারও ঠিকমতো কর্তব্য পালন করছে কি না তাও প্রধানমশাই নিজেও মাঝে মাঝে তদারকি করতে লাগলেন ।
একদিন রাতদুপুরে চৌকিদার সেই লোকটিকে দেখলো যে, হাতে একটি গাঁতি নিয়ে কোথায় যাচ্ছে। দূর থেকে তাকে সাবধানে লক্ষ্য করতে করতে চৌকিদার চলতে লাগলো পরে দেখা গেল, একটি ঘরের মাটির দেওয়ালে সে ধীরে ধীরে ছিদ্র করলো। তারপর ছিদ্রের ভেতর দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকলো। তারপর বাড়ির মধ্যে ‘চোর চোর’ শব্দ হলো। চোরও দ্রুতভাবে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলো এবং জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে গেলো। আলো জ্বালিয়ে সেই ঘরের লোকজন গ্রামবাসীদের চিৎকার করে ডাকতে লাগলো। তক্ষুনি চোর জঙ্গলের চারদিক ঘুরে অন্য পথে গেলো । তারপর লোকের ভীড় যেখানে, সেখানেই এসে জিজ্ঞেস করতে লাগলো, ‘কি হয়েছে? কি হয়েছে?” তারপর সেই লোকদের সঙ্গে পড়ে সেও ‘চোর চোর’ বলে এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে লাগলো । চোরটির গতিবিধি লক্ষ্য করে চৌকিদার একটা জায়গায় লুকিয়ে বসেছিলো। চোর গিয়ে সেইখানে ‘এই চোর ধরেছি, এ চোর ধরেছি’ বলে চিৎকার করতে লাগলো। তার কথায় লোকেরা চৌকিদারকে বিদ্রুপ করলো, প্রহার করতে উদ্যত হলো। অমনি গ্রামপ্রধান চোরটিকে সঙ্গে নিয়ে লতার বা সাপের ভয় চলছিলো। গেলো গৃহস্থের করে বেঁধে চুরি করা জিনিস বিচার হলো তাদের নিবারণ করলেন এবং চৌকিদারের নিকট সবকথা শুনলেন। গ্রামপ্রধান সেই জঙ্গলের দিকে যেতে লাগলো। চোরটি বলেছিলো ‘এই জঙ্গলে আছে। রাত্রে ওখানে না যাওয়াই ভালো’ চৌকিদার ও অন্যান্য লোকও সঙ্গে চোরটি পিছিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছিলো। জঙ্গলের মধ্যে পাওয়া কিছু জিনিষপত্র ভরা একট বাক্স এবং চোরের গাঁতি। এবার চোরকে ভালো ফেলা হলো। চোরের বাড়িতে গিয়ে তল্লাসি করা হলো। সেখানেও অনেক পাওয়া গেলো। চোর তো বেদম মার খেলো তারপর আদালতে তার এবং সমুচিত শাস্তি ভোগ করতে থাকলো। হিতোপদেশ চোর সাধু সেজে অন্য সাধুকে চোর রূপে ব্যাখ্যা করে। এভাবে বহু লোককে বিভ্রান্ত করতে তাকে। বুদ্ধিমান ব্যক্তি আসল চোরকে খুঁজে পায় এবং সেই বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়। তেমনই কলিযুগের মানুষ ভালোকে মন্দ, মন্দকে ভালো মনে করে বিভ্রান্ত হয়। তত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তি ভালো মন্দ বিচার করে কৃষ্ণভজন করেন। তিনি জাগতিক দোষ- ত্রুটিগুলোকে চিহ্নিত করতে পারেন এবং নিজেকে সর্ব বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত রেখে আনন্দময় জীবনে উপনীত হতে পারেন।
Hore krishna Thanks For Reading
সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।