গীতা সম্পর্কে কিছু অতিরিক্ত জ্ঞান

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 174 বার দেখা হয়েছে

গীতা সম্পর্কে কিছু অতিরিক্ত জ্ঞান

১। গীতা হচ্ছে সমস্ত শাস্ত্রের সারাতিসার। এমন কি গীতায় এমন কিছু আছে যা অন্যান্য কোনো শাস্ত্রে পাওয়া যায় না। যেমন: ৫ম পুরুষাথ।

২। মহাভারতের ভীষ্মপর্বের ২৫ থেকে ৪২নং অধ্যায়ের এই ১৮ টি অধ্যায় হল ভগবদগীতা বা গীতোপনিষদ

৩। গীতায় আছে ৭০০ শ্লোক আছে। তার মধ্যে ধৃতরাষ্ট্র বলেন ১টি শ্লোক, সঞ্জয় বলেন ৪০টি শ্লোক, অর্জুন বলেন ৮৫টি শ্লোক, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন ৫৭৪টি শ্লোক। আর পুরো গীতায় ৯৫৮০ টি সংস্কৃত শব্দ আছে।

৪। গীতার ১৮টি অধ্যায়ের মধ্যে প্রথম ৬টি অধ্যায়কে বলে কর্মষটক্, মাঝখানের ৬টি অধ্যায়কে বলে ভক্তিষটক্, আর বাকি ৬টি অধ্যায়কে বলে জ্ঞানষটক্। এর মধ্যে ভক্তিষটক্ হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ। আর ভক্তিষটক্-এর মধ্যে ৯ম অধ্যায় হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ আর ৯ম অধ্যায়ের মধ্যে ৩৪ নং শ্লোক সর্বশ্রেষ্ঠ।

৫। গীতা পড়লে ৫টি বিষয় জানা যায় ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল ও কর্ম।

৬। যদিও গীতার জ্ঞান ৫০০০ বছর আগে বলেছিলেন। কিন্তু ভগবান চতুর্থ অধ্যায়ে বলেছেন এই জ্ঞান তিনি এর আগেও বলেছেন, ১২,০৪,০০,০০০ বছর আগে, মানব সমাজে এই জ্ঞান প্রায় ২০,০0,000 বছর ধরে বর্তমান, কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেলে পুনরায় আবার তা অর্জুনকে দেন।

৭। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে মাত্র ৪০ মিনিটে এই গীতার জ্ঞান দেন।

৮। গীতার মাহাত্ম্য অনেকে করে গেছেন তার মধ্যে শ্রীশঙ্করাচার্য, স্কন্দপুরাণ থেকে শ্রীল ব্যাসদেব, শ্রীবৈষ্ণবীয় তন্ত্রসারে গীতামাহাত্ম্য আর আছে পদ্মপুরাণে দেবাদিদেব শিবকর্তৃক ১৮টি অধ্যায়ের মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছেন।

৯। গীতাতে অর্জুনের ২০টি নাম আর কৃষ্ণের ৩৩টি নামের উল্লেখ করা হয়েছে।

১০। গীতাতে ‘মাং‘ এবং ‘মামেব‘ কথাটি বেশি আছে, ‘যোগ‘ শব্দটি আছে ৭৮ বার, ‘যোগী‘ আছে ২৮ বার আর ‘যুক্ত‘ আছে ৪৯ বার।

১১। গীতায় অর্জুন ১৬টি প্রশ্ন করে আর কৃষ্ণ তা ৫৭৪টি শ্লোকের মাধ্যমে উত্তর দেন।

১২। পুরো গীতার সারমর্ম মাত্র ৪টি শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে, ১০ অধ্যায়ের ৮ থেকে ১১ নং শ্লোকে।

১৩। পুরো গীতায় অর্জুন ৪৫টি নামে কৃষ্ণকে সম্বধোন করছেন, আর কৃষ্ণ অর্জুনকে ২১টি নামে সম্বধোন করেছেন।

ভগবদ্গীতা পাঠের ফল

* সমস্ত বৈদিক জ্ঞানসহ জগতের সমস্ত তত্ত্ব জানা হয়ে যায়; আর কোনো তত্ত্ব জানার বাকি থাকে না। (গীতা ৭/২ ও ৪)

* সম্পূর্ণভাবে মোহমুক্ত হওয়া যায়। (গীতা ১৮/৭২-৭৩)

* পাপ ও পূণ্য উভয় প্রকার কর্ম থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হওয়া যায়। (গীতা ৪/৩৬-৩৭)

* সংসারুবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া যায়। (গীতা ৯/১-২)

* সৃষ্টিকালে পুনরায় জন্মগ্রহন করতে হবে না এবং প্রলয়কালে ব্যথিত হতে হবে না। (গীতা ১৪/২ ও ৫)

* ভগবানের নিত্যধাম লাভ করে নিত্য চিন্ময় আনন্দ লাভ করা যায়। (গীতা ৪/৯)

* নিয়মিত গীতা পাঠ করলে যিনি নিয়মিত গীতা অধ্যয়ন করেন, তাঁর সেই জ্ঞানযজ্ঞের দ্বারা আমি পূজিত হই। (গীতা ১৮/৭০)

* নিয়মিত শ্রবণ করলে কেউ যদি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে নিয়মিত গীতা শ্রবণ করেন, তবে তিনি পাপমুক্ত হয়ে পুণ্যকর্মকারীদের শুভলোক প্রাপ্ত হন। (গীতা ১৮/৭১)


মাসিক চৈতন্য সন্দেশ ডিসেম্বর ২০২২ হতে প্রকাশিত

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।