গীতার অজানা তথ্য

প্রকাশ: ৮ ডিসেম্বর ২০১৯ | ১১:২১ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০ | ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 1802 বার দেখা হয়েছে

গীতার অজানা তথ্য

হরে কৃষ্ণ, আজ ০৮/১২/২০১৯ রবিবার পবিত্র মোক্ষদা একাদশী বা গীতা জয়ন্তী।এই তিথিতেই পরম পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা বীর অর্জুনকে ৫১৫৫ (৩১৩৯ খ্রিস্টপূর্ব) বছর আগে অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লা একাদশী (মোক্ষদা একাদশী) তিথিতে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে উদ্দেশ্য করে মানবজাতির কল্যাণার্থে কুরুক্ষেত্রের রণাঙ্গনে পরম পবিত্র গীতার বাণী দান করেছিলেন। তাই এই দিনটিকে গীতা জয়ন্তী বলা হয় । শ্রীমদ্ভগবদগীতা হচ্ছে সমস্ত গ্রন্থের সারাতিসার। কারণ অন্যান্য গ্রন্থে যা আছে শ্রীমদ্ভগবদগীতায় তা সবই আছে। তাই প্লিজ…….আপনার কর্মব্যস্ত জীবনের মূল্যবান কিছু সময় এই অমূল্য গ্রন্থ অধ্যয়নে জন্য রাখুন…….গীতার জ্ঞান আহরণ করুন…….গীতার আলোয় নিজেকে আলোকিত করুন…….জয় শ্রীমদ্ভগবদগীতা…….

গীতা সম্পর্কিত কিছু জ্ঞানঃ–
১। গীতা হচ্ছে সমস্ত শাস্ত্রের সারতিসার।
২। মহাভারতের ভীষ্মপর্বের (২৫ থেকে ৪২) এই ১৮ টি অধ্যায় হল ভগবদগীতা বা গীতোপনিষদ ।
৩। গীতায় রয়েছে ৭০০ শ্লোক। তার মধ্যে ধৃতরাষ্ট্র বলেন ১টি শ্লোক, সঞ্জয় বলেন ৪০টি শ্লোক, অর্জুন বলেন ৮৫টি শ্লোক, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন ৫৭৪টি শ্লোক । আর পুরো গীতায় ৯৫৮০ টি সংস্কৃত শব্দ আছে ।
৪। গীতার ১৮টি অধ্যায়ের মধ্যে প্রথম ৬টি অধ্যায়কে বলে কর্মষটক, মাঝখানের ৬টি অধ্যায়কে বলে ভক্তিষটক, আর বাকি ৬টি অধ্যায়কে বলে জ্ঞানষটক ।
৫। গীতা পড়লে ৫টি জিনিষ সর্ম্পকে জানা যায় – ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল ও কর্ম ।
৬। যদিও গীতার জ্ঞান ৫০০০ বছর আগে বলেছিল কিন্তু ভগবান চতুর্থ অধ্যায় বলেছেন এই জ্ঞান তিনি এর আগেও বলেছেন, মহাভারতের শান্তিপর্বে (৩৪৮/৫২-৫২) গীতার ইতিহাস উল্লেখ আছে । তার মানে গীতা প্রথমে বলা হয় ১২,০৪,০০,০০০ বছর আগে, মানব সমাজে এই জ্ঞান প্রায় ২০,০০,০০০ বছর ধরে বর্তমান, কিন্তু কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেলে পুনরায় আবার তা অর্জুনকে দেন ।
৭। গীতার মাহাত্ম্য অনেকে করে গেছেন, তার মধ্যে শ্রীশঙ্করাচার্য, স্কন্দপুরাণ থেকে শ্রীল ব্যাসদেব, শ্রীবৈষ্ণবীয় তন্ত্রসারে গীতা মাহাত্ম্য আর পদ্মপুরাণে দেবাদিদেব শিব কর্তৃক ১৮টি অধ্যায়ের মাহাত্ম্য বর্ণিত আছে ।
৮। গীতাতে অর্জুনের ২২ টি নাম আর কৃষ্ণের ৪৩টি নামের উল্লেখ করা হয়েছে ।
৯। গীতাতে ‘মাম্’ এবং ‘মামেব’ কথাটি বেশি আছে, ‘যোগ’ শব্দটি আছে ৭৮ বার, ‘যোগী’ আছে ২৮ বার আর ‘যুক্ত’ আছে ৪৯ বার ।
১০। গীতার ২য় অধ্যায়কে বলা হয় গীতার সারাংশ ।
১১। ভগবান যখন বিশ্বরূপ দেখান তখন কাল থেমে যায়।
১২। গীতায় অর্জুন ১৬টি প্রশ্ন করেন আর কৃষ্ণ তা ৫৭৪টি শ্লোকের মাধ্যমে উত্তর দেন ।
১৩। পুরো গীতার সারমর্ম মাত্র ৪টি শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে, ১০ম অধ্যায়ের ৮ থেকে ১১ নং শ্লোক-এ।
১৪। গীতায় ৩টি গুণ, ৩টি দুঃখ আর ৪টি আমাদের প্রধান সমস্যার কথা বলেছে ।
১৫। গীতায় সাধুর ২৬টি গুণের কথা বলা হয়েছে আর ৬টি আসুরিক প্রবৃত্তির কথা বলা হয়েছে ।
১৬। নরকের ৩টি দ্বারের কথা বলা হয়েছে (কাম, ক্রোধ ও লোভ)
১৭। গীতা অনুযায়ী, ব্রাহ্মণের ৯টি গুণ, ক্ষত্রিয়ের ৭টি গুণ, বৈশ্যের ৩টি গুণ আর শুদ্রের ১টি গুণ ।
১৮। গীতায় ৩টি কর্মের প্রেরণা আর ৩টি কর্মের আশ্রয়ের কথা বলা আছে ।
১৯। গুণ অনুসারে ৩ প্রকারের ত্যাগের কথা বলা হয়েছে ।
২০। ৩ প্রকারের আহার, যজ্ঞ, তপস্যা, শ্রদ্ধা, পূজা ও দানের কথা বলা হয়েছে ।
২১। ২ টি স্বভাবের এবং ৫ টি চেতনার জীবের কথা বলা হয়েছে ।
২২। ৩ প্রকার জীবের কথা বলা হয়েছে ।
২৩। ৩ প্রকার ক্লেশ বা দুঃখ এবং মানুষের ৬ টি প্রধান শত্রুর কথা বলা হয়েছে।
২৪। জড় দেহের ৬ টি পরিবর্তনের উল্লেখ রয়েছে।
২৫। ব্রহ্ম উপলব্ধির ৫টি স্তরের কথা বলা হয়েছে ।
২৬। ভগবানের প্রিয় ভক্তদের ৩৬ টি গুণের কথা বলা হয়েছে ।
২৭। গীতায় ২৫ জন সৃষ্টের কথা বলা হয়েছে যারা স্থাবর, জঙ্গম ও সমস্ত প্রজাদের সৃষ্টি করেছেন । (কৃষ্ণ → ব্রহ্মা → চতুষ্কুমার, সপ্তমহর্ষি, চতুর্দশ মনু)।
২৮। ৩ প্রকারের জ্ঞান, কর্ম ও কর্তার উল্লেখ রয়েছে।
২৯। ৪ প্রকার সুকৃতিবান ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে । আর ৪ প্রকার দুষ্কৃতিবানের কথা বলা হয়েছে ।
৩০। জড়া প্রকৃতির ৮টি উপাদানের কথা বলা হয়েছে ।
৩১। শ্রীমদ্ভগবদগীতায় বর্ণিত শান্তির সূত্রটি হলঃ “ভগবান শ্রীকৃষ্ণ – সমস্ত যজ্ঞ ও তপস্যার ভোক্তা, সমস্ত লোকের মহেশ্বর এবং সমস্ত জীবের হিতাকাঙ্ক্ষী বন্ধু।”

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।