এই পোস্টটি 1128 বার দেখা হয়েছে
![গবেষণায় বিশ্বাসের অভিনব পরীক্ষা](http://csbtg.org/wp-content/uploads/2019/06/Prayers.jpg)
বিশ্বাসে মেলায় বস্তু তকে বহুদূর’ এ তথাকথিত কথার গুরুত্ব আজকালকার মানুষের কাছে কতটুকুই বা গুরুত্ব পায়? যান্ত্রিক সভ্যতার যন্ত্র নির্ভর মানুষেরা সবকিছুকেই গ্রহণ করে, “প্রমাণ করব, নিজের চোখে দেখব, কান দিয়ে শুনব তকেই গ্রহণ করব।” মোটামুটি সবকিছুকেই এভাবেই বুঝে শুনে গ্রহণ করার প্রবণতা এখন একটু বেশিই বলাই যায়। কিন্তু সবচেয়ে বেশি বোধহয় ভগবান নিয়ে দ্বন্দটাই, তাও আবার অতি বিজ্ঞজনদের কাছেই। তাছাড়া তাদেরকেই তো অনুসরণ করছে অপেক্ষাকত কম জ্ঞানবানরাই। যাদেরকে সমাজ অজ্ঞ বলছে কিন্তু বিবেকহীন নয়। সেসব বিজ্ঞরাই ভগবান নিয়ে যাচাই-বাছাই এবং একটু যেন অতিরিক্তই তর্কই করে। দেখাতে পারবে ভগবানকে, স্বচক্ষে দেখলেই তবে……” তখন বিশ্বাসে মেলায় বস্তু…….” ঐ প্রবাদ বাক্যটিও মুখ থুবড়ে পড়ে। কিন্তু ২০০৮ সালের ড্যালি মেইল (UK) এমন এক চাঞ্চল্যকর গবেষণালব্দ তথ্য প্রকাশ করল তাতে মনে হয় ঐসব বিজ্ঞজনদের একটু বিবেক ফিরে আসে। কেননা এটি তো বিজ্ঞানীই বলেছে। আর তাদের মা তো ঢুকে বসে আছে। ‘বিজ্ঞান’ শব্দটি। ওদের সমস্ত বিশ্বাস এই বিজ্ঞানেই নিহিত। ভাগ্যে ভালো যে, এখানে ‘নিহত’ বলা হয়নি। তাতে না আবার ঘটে যায়! যে যাই হোক অন্ততপক্ষে বিজ্ঞান দিয়ে হলেও অবশেষে প্রমাণিত হল ভগবানে বিশ্বাসে কতটু নিরাপদ এবং যুক্তিসঙ্গতও বটে।
গবেষণাটি করেছিল অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা (The Daily mail (UK) on 4 Oct, 2008, ২০০৮) তারা ১২ জন রোমান ক্যাথলিকস এবং ১২ জন নাস্তিক লোকদের উপর ভার্জিন ম্যারির (যীশু ক্রিস্টের মাতা, কোলে শায়িত যীশু) ছবির উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রিক শক চালায়। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য যে, ১২ ধার্মিক অর্থাৎ ঈশ্বরে বিশ্বাসী তাদের ব্যথা সহ্য করার প্রবণতা অন্য ১২ জন নাস্তিকদের তুলনায় অনেকাংশ বেশী। অর্থাৎ ভগবানের প্রতি বিশ্বাস (যে কোন ধর্মাবলম্বীদের জন্য) যে কাউকেই তার সহ্য ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ মানসিকভাবে তার অনেকগুলো পজিটিভ লক্ষণ ফুটে ওঠে। সেটাই এ গবেষণায় উঠে আসে।
অন্য আরেকটি পরীক্ষায় অন্তর্ভূক্ত করা হয় দুটো ছবি একটি হল ঐ ভার্জিন ম্যারির ছবি এবং অন্যটি হল লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির আঁকা ১৫ শতাব্দির নারীর একটি ছবি। দুটো ছবির সঙ্গেই প্রায় মিল পরিলক্ষিত হয় কিন্তু পার্থক্যটি হল ব্যক্তি নিয়ে। একজন হলেন ম্যারি এবং যীশু খ্রীষ্ট ও অন্যজন হলেন একজন সাধারণ নারী (যদিও মুখাবয়ব ও ভঙ্গিমা প্রায় একই ছিল)। যাদের নিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছিল তাদেরকে স্বেচ্ছাসেবকগণ জানতে দেয়নি যে, ঠিক কি জন্যে এ গবেষণা চলছিল। তাদেরকে যখন ইলেকট্রিক শক দেয়া হচ্ছিল তখন ভিন্ন ছবির জন্য ধার্মিক ব্যক্তিদের ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতি হচ্ছিল। যখন ম্যারির ছবির সম্মুখে ইলেকট্রিক শক দেয়া হচ্ছিল তখন তাদের মস্তিস্কে ব্যথার অনুভূতির পরিমাণ ১২% কম ছিল অন্য ছবিটির সম্মুখে ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতার চেয়ে। এ সম্পূর্ণ পরীক্ষাটির ফলাফল জানার জন্য বিজ্ঞানীরা গজও স্ক্যানার সহ বিভিন্ন উন্নত টেকনোলজির প্রয়োগ করেছিল। যাতে তার লেটেস্ট ব্রেইন-স্ক্যানিং কৌশলও প্রয়োগ করেছিল।
সুতরাং পারমার্থিক কার্যকলাপ মানুষকে পজিটিভ হতে শেখায় এবং তার সহনশীলতাও বৃদ্ধি করতে শেখায় এই হল এ গবেষণার ফলাফল। ধার্মিক ব্যক্তিরা বৈদ্যুতিক শকের সময় ম্যরি ও যীশু খ্রীষ্টের স্মরণের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ মনে করেছিল। যার ফলে তাদের সহনশীলতাও অনেক বেশী হয়েছিল। এবং গবেষকরা এটা একমত যে, প্রত্যেকেই নিজ নিজ ভগবানের প্রতি বিশ্বাস রাখা উচিত। এ গবেষণার ফলে নাস্তিকদের কিছু হলেও মতিগতি ফিরে আসে। হরে কৃষ্ণ।