ওড়ন ষষ্ঠী

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ | ১২:৫৫ অপরাহ্ণ আপডেট: ২ ডিসেম্বর ২০১৯ | ১২:৪৪ অপরাহ্ণ

এই পোস্টটি 974 বার দেখা হয়েছে

ওড়ন ষষ্ঠী

আসছে ১লা ডিসেম্বর ওড়ন ষষ্ঠী        

ওড়ন-ষষ্ঠী – শীতের প্রথম দিন
.
“শীতের শুরুতে একটি উৎসব ওড়ন-ষষ্ঠী, যেটি নির্দেশ করে যে, ঐ দিন থেকে ভগবান শ্রীজগন্নাথদেবকে শীতবস্ত্র পরানো হবে।” –

শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, মধ্যলীলা, ১৬/৭৯, তাৎপর্য।


একবার শ্রীল পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি এবং শ্রীল স্বরূপ দামোদর জগন্নাথ পুরীতে এসে ওড়ন-ষষ্ঠী উৎসব দেখেছিলেন। ঐদিনে ভগবানকে নতুন শীতবস্ত্র প্রদান করা হয়েছিল এবং ঐদিন থেকে ভগবানকে শীতবস্ত্র পরানো হবে। যে বস্ত্র ভগবানকে অর্পণ করা হয়েছিল তা তাঁতির নিকট হতে ক্রয় করে কোনোরূপ ধৌত না করেই পরানো হয়েছিল। যথাযথ অনুশাসন অনুযায়ী বিগ্রহকে প্রদান করার পূর্বে নতুন বস্ত্র ধুয়ে মাড় অপসারণ করতে হয়, নতুবা সেটি অপবিত্র বলে গণ্য করা হয়।

তা দেখে, পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি ক্রোধান্বিত হলেন এবং এতে তাঁর বুদ্ধি কলুষিত হল। শ্রীল স্বরূপ দামোদরের সাথে কথা বলার সময় তিনি শ্রীজগন্নাথদেবের সেবক পাণ্ডাদের সমালোচনা করলেন যে কেন তাঁরা মাড়বস্ত্র ভগবানকে পরিধান করালেন। শ্রীল স্বরূপ দামোদর পুণ্ডরীক বিদ্যানিধিকে ভদ্র ভাষায় শান্ত করার চেষ্টা করলেন এই বলে যে, এটি সরলভাবেই সম্পাদন হয়েছে এবং যদি এতে ভগবান প্রীত না হতেন, তিনি অবশ্যই তা বন্ধ করতেন। পরমেশ্বর ভগবানের আচরণ পার্থিব শিষ্টাচার অধিক্ষেত্র বা লৌকিকতার ঊর্ধ্বে। তাতেও পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি সন্তুষ্ট হতে পারলেন না।

পুন্ডরীক বিদ্যানিধি

ঐ রাতে, ভগবান শ্রীজগন্নাথ এবং শ্রীবলরাম পুণ্ডরীক বিদ্যানিধির স্বপ্নে এসে তাকে সজোরে চড় দিতে শুরু করলেন, তাঁর সেবকদের সেবাদানপ্রক্রিয়ার সমালোচনা করার শাস্তি প্রদান করতে লাগলেন। এই শাস্তিদান প্রায় আটচল্লিশ মিনিট ধরে চলছিল। এরপর পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি তাঁদের নিকট ক্ষমাভিক্ষা চাইলেন এবং ভগবান কৃপাপূর্ণ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে মন্দিরে প্রত্যাবর্তন করলেন। হাঁটতে হাঁটতে পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি অনুভব করলেন যে, তার মুখ স্ফীত হয়ে গেছে এবং ভগবানের হস্তছাপ তার গালে বিঁধে গেছে। তিনি বুঝতে পারলেন যে, এটি তার প্রতি ভগবানের শুদ্ধ কৃপা, এবং এরপর তার স্ফীত মুখমণ্ডল দর্শন করে নিজেই পরমানন্দে হাসলেন।

এই শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে জগন্নাথ কর্মী জড়বুদ্ধিসম্পন্ন স্মার্তদের তাঁর সেবকদের আচরণের নিন্দা করার দুর্বুদ্ধির নিরসণ করেছেন। ভগবান তাঁর প্রিয় ভক্তদেরই স্বপ্নে এই প্রকার কৃপা করেন। পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি স্বরূপ দামোদরকে এই ঘটনার কথা জানালেন।
এই মাহাত্ম্য শ্রীচৈতন্য ভাগবতের অন্ত্যখণ্ড দশম অধ্যায়ে সবিস্তারে বর্ণিত হয়েছে।

শ্রীধাম মায়াপুরের রাজাপুর জগন্নাথ মন্দিরেও এই উৎসব পালন করা হয় এবং ভগবানকে মারুয়া বস্ত্র পরিধান করানো হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা ভগবানের এই বেশ দর্শন করতে আসেন। সারাদিন পরমানন্দে কীর্তন, শাস্ত্রপাঠ এবং মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।