এই পোস্টটি 176 বার দেখা হয়েছে
ছবিটিই বলে দিচ্ছে নিউজিল্যান্ডের অন্যতম খ্যাতিমান রাগবি খেলোয়াড় মার্ক এলিসের কি বিশাল পরিবর্তনটাই না হয়েছে। কোথায় বল নিয়ে ছোড়াছুড়ি আর দৌড়ঝাপে মেতে থাকবে তা নয়, সে জায়গায় রাগবি খেলোয়াড় মার্ক এলিসের এতটা পরিবর্তন! মাথায় শিখা, কপালে তিলক আর অঙ্গে জড়িয়ে আছেন ধুতি ও গলবস্ত্র। সবাই মনে করতে পারেন না এলিস বোধহয় কোন এক ইসকন মন্দিরে পুরোদস্তুর ব্রহ্মচারী হয়ে গেছেন। পাঠকদের ধারণাটা সত্যি হলেও পুরোপুরি সত্যি নয়। সম্পূর্ণ সত্যটি হলো এই যে, মার্ক এলিস আসলে নিউজিল্যান্ডের একটি বিখ্যাত শোতে ইসকনের ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য অভিনয় করেছেন মাত্র। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল How the other half lives নামক আট অংশের ধারাবাহিক ডকুমেন্টারী এই সিরিজের পরিচালক ও উপস্থাপক মার্ক এলিস নিজেই এর পরিচালক। তার উপরে অভিনয়টাও নিজের করে নিয়েছেন। অভিনয় বলতে এই যে, তিনি প্রকৃতপক্ষে ইসকন নিউজিল্যান্ডের কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করে সবার কাছে তুলে ধরেছেন ইসকনের প্রচার কার্যক্রমকেই। মার্ক এলিস এমনিতেই নিউজিল্যান্ডে তার রাগবি খেলার জন্য খুবই জনপ্রিয় একজন তারকা। রাগবি খেলা থেকে অবসর নেয়ার পরপরই নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন শোতে উপস্থাপনাসহ আরো অন্যান ক্ষেত্রে তিনি নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। গত ২০০৬ এবং ২০০৭ সালে পরপর দু’দুবার নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা অ্যাওয়ার্ড The Qantas তার ঝুলিতে জমা পড়ে। মূলত অ্যাওয়ার্ডটি তাকে দেয়া হয় নিউজিল্যান্ডের বছর সেরা টেলিভিশন ব্যক্তিত্বের জন্য। আর এখন ‘How the other half lives’ নামক এই শোতে মার্ক এলিসকে এরকম একটি রুে দেখতে পেয়ে দর্শকরা অবাকই হয়। অবাক হয়েছেন খোদ নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা সংবাদমাধ্যম The Newzealand Heralde, কেননা তারা মার্ক এলিসকে রাস্তায় ভরুদের সাথে এক সন্ধ্যায় হরিনাম কীর্তনে নৃত্যরত অবস্থায় দেখতে পেয়েছে। শেষমেশ এর কারণ তুলে ধরতে গিয়ে হেরাল্ডের কাছে সাক্ষাৎকার দিতে হয় এলিসের হয়ে তার একজন ঘনিষ্ট বন্ধুকে। তিনি তখন । হেরাল্ডকে এলিসের শো সম্পর্কে বলেন, -এই শোটির মূল উদ্দেশ্য এই যে, নিউজিল্যান্ডের অনেক লোকই অম্লতার 1 মঝে বসবাস করছে……. আর এসব 1 লোকদের পেছনে কিছু প্রকৃত লোক যে রয়েছে সে সম্পর্কে বাস্তবিকপক্ষে তুলে । ধরা। শোটিতে তুলে ধরা হয় কিভাবে ইসকনের ভক্তরা এক উচ্চ দর্শনের আদর্শ 1 দ্বারা লালায়িত। এখানে ভক্তদে নিত্যদিনের পারমার্থিক কর্মসূচি যেমন ভোর ৪টায় ঘুম থেকে উঠা, আরতি, জগ, – পারমার্থিক ক্লাস, প্রসাদ, প্রচার, সন্ধ্যায় । ভাগবতীয় বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে সুবিস্তৃত তুলে ধরা হয়। সেক্ষেত্রে মার্ক এলিসকে একজন প্রতিকী ভক্ত হিসেবে শোতে তুলে ধরা হয়। এক্ষেত্রে মার্ক ই এলিসকেও অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। ভক্তদের সাথে তিনিও মন্দিরে ভোর ৪টায় ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে পুরো দিনের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। উল্লেখ্য এলিস অকল্যান্ডের ইসকন মন্দিরে এভাবেই প্রায়। অনেক দিন কাটিয়েছিলেন। তখন তার দিনগুলো মন্দিরের ভক্তদের সাথে কেমন কেটেছিল এ প্রশ্নের উত্তর মার্ক এলিস নিজেই দিয়েছেন। তিনি বলেন, “তারাই (ইস্কনের ভক্তরা) হল একমাত্র লোক যাদেরকে আমি আমার জীবনে প্রথমবারের মত দেখেছি যারা কিনা প্রতিদিন ভোর ৪.৩০ এ ঘুম থেকে উঠে সকালে নাচ- গানের মাধ্যমে আনন্দে সম্পূর্ণভাবে মেতে থাকে। সত্যিই সেখানে খুবই উচ্চমানের নির্মল আনন্দ পেয়েছি।” প্রথম দিকে ইসকনের ভক্তরা এলিসের বিশাল সুখ্যাতির জন্য তার সঙ্গে সেভাবে মেলামেশা করেনি পরবর্তীতে তা শিথিল হয় এবং এলিসকে সাথে নিয়ে ভক্তরাও আনন্দে মেতে উঠে। উল্লেখ্য এলিসের ভাষ্যমতে তার পুরো ক্যারিয়ারই সে অসংখ্যবার হতাশায় ভুগেছে, যেটি নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীরাও ভালভাবে জানে। ইসকনের এ উচ্চতর ভাবধারা তাকে সে হতাশার উত্তরণ হিসেবে তিনে মনে করছেন। এখন এলিস কেমন আছে সে খবরটি আপাতত দিতে না পারলেও এটুকু উপলব্ধি করতে কষ্ট হচ্ছে না যে, খানিকটা অভিনয় তার জীবনটাকেই পাল্টে দিয়েছে যেটি এলিসকে একদিন না একদিন নিয়ে যেতে পারে অভিনয় নয় এক চিরশাশ্বত বাস্তবের দিকে যেটি হল ‘কৃষ্ণভাবনামৃত’। [সূত্র The Newzealand Herald ম্যাগাজিন, Staff.co.nt]
হরেকৃষ্ণ।
চৈতন্য সন্দেশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন :https://play.google.com/store/apps/details?id=com.differentcoder.csbtg
Hare Krishna Thanks For Reading