বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯

ইস্‌কন প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল প্রভুপাদের লীলাস্থলীর দুর্লভ দর্শন

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২২ | ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২২ | ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ
ইস্‌কন প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল প্রভুপাদের লীলাস্থলীর দুর্লভ দর্শন
স্কটিশ চার্চ কলেজ

উত্তর কলকাতায় অবস্থিত এই কলেজটি প্রাচীনতার দিক থেকে দ্বিতীয়। বিগত বছরগুলোতে কলেজটি বহু খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছে। তাদের মধ্যে এ.সি ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ ছিলেন সবোর্”” শীর্ষস্থানীয়। প্রভুপাদ ১ম বর্ষে সংস্কৃত এবং ইংরেজী নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২য় বর্ষে সংস্কৃত ও দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করেন। একসময় তিনি সহপাঠীদের সাথে চৈতন্য মহাপ্রভুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

গোবিন্দ ভবন, শ্রীল প্রভুপাদের ঘর

“ছেলেবেলায় রাধাগোবিন্দজী ছিলেন আমার আনন্দের উৎস। আমি আমার পিতাকে রাধা গোবিন্দের বিগ্রহ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম এবং তিনি আমাকে তা প্রদান করেন। পরবর্তীতে আমি বিগ্রহদ্বয়ের সেবা করি। আমি আমার পিতাকে একটি রথ প্রদান করার জন্যও অনুরোধ করি। রথটি আমাদের ঘর হতে শ্যামানন্দদের ঘর পর্যন্ত যেত। আমাদের ঘরের পরবর্তীতে নামকরণ করা হয় গোবিন্দ ভবন।” -শ্রীল প্রভুপাদ

মতিলাল শীলের উন্মুক্ত বিদ্যালয়

এটি হচ্ছে মতিলাল শীল বিদ্যালয়, প্রভুপাদের শ্রেণিকক্ষ। কক্ষগুলো খুবই শৃঙ্খলাবদ্ধ। প্রতিটি বেঞ্চে ৪ জন বালক বসে। তারা ১টি সাধারণ ডেস্কের সাথে ৪টি দোয়াত ভাগাভাগি করতেন। মতিলাল ছিল ছেলেদের স্কুল। এটি ১৮৪২ সালে একজন সমৃদ্ধশালী বৈষ্ণব সুবর্ণ বণিক কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯০৪ সালে শ্রীল প্রভুপাদ ৮ বছর থাকাকালে নিকটবর্তী মতিলাল শীল বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। বিদ্যালয়টি হ্যারিসন রোড এবং প্রধান সড়কের কোণে অবস্থিত।

খিদিরপুর ফেরিঘাট

এখান থেকে শ্রীল প্রভুপাদ গ্রীষ্মের সময় ১৯৬৫ সালে এম.ভি জলদূতে চড়ে ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পারমার্থিক সমুদ্রযাত্রা করেছিলেন। বন্দরটি আজ অবধি ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে এটি ভারত সরকারের সম্পত্তি। এটি ভারত সরকার কর্তৃক গঠিত “কোলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট” দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল

শ্রীল প্রভুপাদ যখন কলকাতা আসতেন তিনি প্রায়ই এখানে প্রাতঃভ্রমণ করতেন। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মাঠে প্রভুপাদের বহুসংখ্যক কথোপকথন রেকর্ড করা হয়েছে। মায়াপুর চন্দ্রোদয় মন্দিরের পরিকল্পনাকালে শ্রীল প্রভুপাদ কাঠামোর কমনীয়তা মহিমা এবং উচ্চতার জন্য সময় দিয়েছিলেন।

রাধা গোবিন্দ মন্দির

১৮২২ সালে জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে করুণাময় বিগ্রহ শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দদেব জীউ কলকাতার বুড়াবাজারের একটি ২০০ বছরের পুরাতন মন্দিরে মল্লিকদের দ্বারা সেবিত হয়ে আসছে। শ্রীল প্রভুপাদ ৪ বছর বয়সে এই মন্দিরে প্রথম রথযাত্রা উৎসব পালন করেন।

ইস্‌কন কলকাতায় শ্রীল প্রভুপাদের কক্ষ

শ্রীল প্রভুপাদ এই কক্ষে অতিথিদের সাথে দেখা করতেন এবং তাঁর অনুবাদ করতেন। ইস্‌কনের ইতিহাসে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত এই কক্ষে নেয়া হয়েছিল। মায়াপুরে ই সদর দপ্তর স্থাপন করার জন্য প্রথম জমি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত এই কক্ষেই গৃহীত হয়েছিল। এছাড়াও ১১১১ টাকায় আজীবন সদস্য গঠনের সিদ্ধান্তও এখানে গৃহীত হয়েছিল।

শ্রীল প্রভুপাদের গৃহ

বৃন্দাবনের কৃষ্ণ বলরাম মন্দিরে শ্রীল প্রভুপাদের ঘরটি অবস্থিত। প্রভুপাদ এখানে তাঁর অন্তিম সময় অতিবাহিত করেছেন।

রাধা দামোদর মন্দিরে প্রভুপাদের রান্নাঘর

রাধা দামোদর মন্দির তাঁর রান্নাঘরে প্রসাদ সেবন করার সময়ে প্রভুপাদ রূপ গোস্বামীর সমাধির দিকে এক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে থাকতেন। বেশ কিছু বছর পরে শ্রীল প্রভুপাদ বলেন যে, তিনি রাধা দামোদর মন্দিরে থাকাকালে রূপ গোস্বামী কাছে থেকে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের জন্য অনুপ্রেরণা ও পরিকল্পনা লাভ করেছিলেন।

দিল্লী গৌড়ীয় মঠ

‘Ligue of Devotees’ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর শ্রীল প্রভুপাদ দিল্লীতে তাঁর গুরুভাতা শ্রীমৎ ভক্তিসারঙ্গ গোস্বামী মহারাজ কর্তৃক আমন্ত্রিত হন। তখন শ্রীল প্রভুপাদ গৌড়ীয় সঙ্গে অবস্থান করেছিলেন। সেখানে তিনি সজ্জন তোষাণি পত্রিকার সম্পাদক করেন। সেখানে অবস্থান কালে তিনি নিজের গ্রন্থের জন্য সমর্থন আদায়ের চেষ্টাও করেছিলেন।

প্রভুপাদের ঘরের গ্রন্থাগার

এটিও বৃন্দাবনে কৃষ্ণ-বলরাম মন্দিরে অবস্থিত।

ইম্‌লি তলা গৌড়ীয় মঠ

ইম্‌লি তলা বৃন্দাবনে যমুনার তীরে অবস্থিত। প্রভুপাদ ১৯৫৩ সালে এখানে কিছুকাল অবস্থান করেছিলেন। এই সময়টা হলো বংশী গোপাল মন্দিরে তাঁর কক্ষ পাওয়ার আগে। রাধা দামোদর মন্দিরে থাকাকালে তিনি প্রায় ইম্‌লি তলা গৌড়ীয় মঠে ভ্রমণ করতেন।

কেশবজী গৌড়ীয় মঠ

কেশবজী গৌড়ীয় মঠ মথুরায় অবস্থিত। শ্রীল প্রভুপাদ এখানে ১৯৫৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর গুরুভ্রাতা শ্রীমৎ ভক্তি প্রজ্ঞান কেশব মহারাজের কাছ থেকে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।

প্রভুপাদের সমাধির সম্মুখভাগ

এই সমাধিটি বৃন্দাবনে কৃষ্ণ বলরাম মন্দিরে অবস্থিত। তিনি সমাধিতে গমন করার পর শিষ্যরা তাঁর দিব্যদেহ এখানে স্থাপন করেন।

বৃন্দাবনে প্রভুপাদের শয়নকক্ষ

এটি হচ্ছে প্রভুপাদের ব্যক্তিগত কক্ষ। প্রভুপাদ কক্ষের বাইরে থেকে তাঁর বার্তালাপ করতেন।


 

মাসিক চৈতন্য সন্দেশ ২০২২ আগস্ট হতে প্রকাশিত
সম্পর্কিত পোস্ট

About csbtg