শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১০ চৈত্র ১৪২৯

ইস্‌কন জি.ই.ভি কর্তৃক আয়োজিত অলিম্পিয়াড

প্রকাশ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ
ইস্‌কন জি.ই.ভি কর্তৃক আয়োজিত অলিম্পিয়াড

মাধব স্মুলেন: সারা বিশ্ব জুড়ে ইস্‌কন মন্দিরগুলো স্থানীয় বেসরকারী এবং সরকারী বিদ্যালয়সমূহে মূল্যবোধ শিক্ষা অলিম্পিয়াডে নিবন্ধনের জন্য আমন্ত্রিত হচ্ছে। এবছর ইস্‌কন কর্তৃক আয়োজিত অলিম্পিয়াডটি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে এটি আয়োজিত হবে। ১-২৬ আগস্ট বিবিধ সেমিনার, কর্মশালা ইত্যাদির মাধ্যমে শুরু হওয়া অলিম্পিয়াড ১৭ অক্টোবর পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হবে। এই অলিম্পিয়াড ১০ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশের যত্নগ্রহণের জন্য গীতার মাধ্যমে তাদের মধ্যে পরিবেশের প্রতি মূল্যবোধের শিক্ষা প্রদান করবে। জাতিসংঘ পরিবেশ প্রকল্পের সহযোগিতায় সম্মিলিতভাবে গোবর্ধন ইকো ভিলেজ এবং ইস্‌কন ইতিমধ্যে ইস্‌কন পাঞ্জবীবাগ এবং পুনে, ব্যাঙ্গালোর, শ্রীরঙ্গম ও নাগপুর সাথে এই অলিম্পিয়াড আয়োজন করছে। আন্তর্জাতিকভাবে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা এবং মালয়েশিয়াও এতে অংশ নিচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক করুণা চন্দ্র দাস বলেন, “আমরা শিশুদের জন্য পরিবেশ শিক্ষাবিষয়ক অনুষ্ঠান শুরু করেছি। কেননা এটি হচ্ছে সময়ের দাবী।”

বৈদিক মূল্যবোধ শিক্ষা সংগঠকেরা প্রতিটি ইস্‌কন মন্দিরে একটি বিশেষ লিংক প্রদান করবে তাদের অধীন বিদ্যালয় সমূহে প্রচারের জন্য। যখন ছাত্ররা সেই লিংকের মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন, তখন সংগঠকেরা দেখতে পাবে যে তারা কোন মন্দিরের মাধ্যমে নিবন্ধন করেছে। অলিম্পিয়াডের সংগঠকেরাও ফিরতি সেই মন্দিরকে প্রতি ছাত্র বাবদ ৫ ডলার অথবা ৫০ রুপি প্রদান করবে যাতে সেই সংশ্লিষ্ট মন্দির তাদের এবং তাদের পরিবারকে একটি ভগবদ্গীতার কপি উপহার স্বরূপ প্রদান করতে পারে। এভাবে তারা মন্দিরগুলোকেও সেই সম্প্রদায় বা পরিবারগুলোর সাথে সংযুক্ত হবার একটি সুযোগ প্রদান করে এবং শ্রীল প্রভুপাদের ১২৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে গ্রন্থ প্রচারের সুযোগ দেয়।
ভারতে শিক্ষার্থীদের যাচাই এবং পরীক্ষণের জন্য অলিম্পিয়াড খুবই পরিচিত পন্থা। ১৫ই জুলাইয়ের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার বিদ্যালয়ের ২,০৩,০০০ শিক্ষার্থী যুক্ত হয়ে যায়। প্রতিদিন নতুন ৩০০-৫০০ রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। তার মধ্যে দুইলক্ষ শিক্ষার্থী হচ্ছে উত্তর প্রদেশের উপজাতি এলাকা থেকে, যাদের জন্য ইস্‌কন ফ্রি কার্যক্রম পরিচালনা করে। অন্যান্য বিদ্যালয়ের মধ্যে ছিল বেসরকারী বিদ্যালয়সমূহ,আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়সমূহ এবং সরকারী বিদ্যালয়সমূহ। নৈতিক মূল্যবোধ, যা ব্রহ্মান্ডকে ভবিষ্যতে মার্গ প্রদর্শন করবে। ১০-১৩ টি ছোটদের দলের জন্য বইটি আশি পৃষ্ঠার এবং ১৪-১৮ টি সিনিয়র দলের জন্য তা ১২০ পৃষ্ঠার।

বুকলেটটি ৬ ধরণের মূল্যবোধ নিয়ে আলোকপাত করে যা নেয়া হয়েছে জাতিসংঘের একটি গবেষণা থেকে,তা একজন ব্যক্তিকে পরিবেশের প্রতি তার যত্নের বিষয়ে অধিক স্পর্শকাতর করে তোলে- ১. পরার্থপরতা ২. বিশ্বাসবোধ ৩. সমতা ৪. বিচার ব্যবস্থা ৫. সততা ৬. ন্যায়পরায়ণতার ক্ষেত্রে।
ড.সুরুচি বলেন “প্রত্যেকটি অধ্যায় বর্ণনা করে কিভাবে এই নীতিগুলো ছাত্রজীবনে প্রয়োগ করা যায়,মূল্যবোধ এবং পরিবেশের সাথে সম্পর্ক এবং ভগবদগীতা ও অন্যান্য শাস্ত্র থেকে প্রাপ্ত উদাহরণ এবং শিক্ষার মাধ্যমে।”
রাজা হরিশ্চন্দ্রের উদাহরণকে সততার আদর্শ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে এবং শ্রীল প্রভুপাদ হচ্ছেন আধ্যাত্মিক পরার্থপরের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বুকলেটটি পড়ে শিক্ষার্থীরা প্রভাবশালী পরিবেশবাদী, প্রচারক এবং শিক্ষাবিদদের সাত পর্বের একটি সেমিনার ও দুই পর্বের কর্মশালায় অংশগ্রহণ করবে।
১ আগষ্ট প্রথম সেমিনারটি প্রদান করেন গোবর্ধন ইকো ভিলেজের সম্মানিত পরিচালক শ্রীপাদ গৌরাঙ্গ দাস, যার বিষয় ছিল ‘আভ্যন্তরীণ জলবায়ু পরিবর্তন বাহ্যিক জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে।’ দ্বিতীয়টি প্রদান করেন ড. লিভলিন কর কাহলন, যিনি দিল্লী পরিবেশ শিক্ষা এবং শক্তি ও সম্পদ সচেতনতার সহকারী পরিচালক। ১৫ আগষ্ট ইস্‌কনের যোগাযোগ পরিচালক অনুত্তম দাস সততা নিয়ে কথা বলেন।
১৭ অক্টোবর শিক্ষার্থীরা অনলাইনে একঘন্টা উন্মুক্ত বইয়ের একটি পরীক্ষায় অংশ নেবে সেমিনার এবং বুকলেটে প্রদত্ত বিষয়ের উপর। প্রায়োগিক এই সমস্ত প্রশ্নগুলো পরীক্ষা করবে, জ্ঞান এবং বিষয়ের প্রায়েগিক দক্ষতা তাদের কেমন, যা তারা প্রাত্যাহিক জীবনে শিখছে।
প্রতিযোগিতার ভিত্তি করে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সনদ প্রাপ্ত হবে। জুনিয়র এবং সিনিয়র উভয় দলের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অধিকারীরা যথাক্রমে একটি করে ল্যাপটপ, ফায়ারফক্স বাই সাইকেল এবং কিন্ডেল প্রাপ্ত হবে।

সুরুচি বলেন “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সকলের মধ্যে সচেতনার মাধ্যমে আমরা একটি আন্দোলনের সূচনা করতে পারব এবং প্রকৃতির সুরক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরে একটি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব।” করুণা চন্দ্র বলেন, “আমি মনে করি ইস্‌কনের  এটি একটি বৃহৎ পদক্ষেপ এবং আমার সত্যিই ইস্‌কনের নেতৃবৃন্দের প্রশংসা করা উচিত । আমি বলার সাথে সাথে তারা অতিসত্ত্বর অংশ নিয়েছে এবং তারা সত্যিই অনেক উদার ছিল এবং বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছে, কৃষ্ণভাবনামৃত ভগবদ্গীতার শিক্ষাকে একসূত্রে নিয়ে আসার জন্য।”
অলিম্পিয়াডে রেজিষ্ট্রেশন করার লিংক: https://veolympiad.com/

সম্পর্কিত পোস্ট

About csbtg