এই পোস্টটি 2473 বার দেখা হয়েছে
কালাচাঁন মত ছেড়ে ইসকন মত গ্রহন করায় নারায়ণগঞ্জ লাঙ্গলবন্দে একঘরে তিন পরিবার
এমন সব নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেড় বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার তিনটি হিন্দু পরিবারকে একঘরে করে রেখেছেন একই সম্প্রদায়ের মাতবররা। অভিযোগ রয়েছে, সামাজিক ভাবে হেয় করতে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় খুব কষ্টে দিন কাটছে এই তিন পরিবারের সদস্যদের।
স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালাচাঁন মত ছেড়ে ইসকন মত গ্রহন করায় বাবুল চন্দ্র দাস, তার ভগ্নি পতি ধীরেণ চন্দ্র দাস ও ধীরেণের ছোট ভাই বীরেন চন্দ্র দাসের পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়েছে। তারা লাঙ্গলবন্দ এলাকার বাসিন্দা। যে মতভিন্নতার জন্য একঘরে করা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে উভয় মতের লোকজনই কৃষ্ণানুরাগী। তাছাড়া ধর্মীয় মত-পথের কারণে একঘরে করার কোনো আইন নেই। উল্টো এ ধরনের পদক্ষেপ অপরাধ হিসেবে গন্য হওয়ার কথা। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলেও পরিবার তিনটি প্রশাসনের কোনো সহযোগীতা পায়নি।
ধীরেন চন্দ্র দাস ও বাবুল চন্দ্র দাস জানান, প্রায় দুই বছর আগে তাদের তিনটি পরিবার ইসকন মতবাদে দীক্ষা নেয়। শুধু এ কারনে ২০১৭ সালের ১০ জুলাই থেকে তাদের একঘরে করে রেখেছেন লাঙ্গলবন্দ এলাকার ঋষিপাড়া পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মনিরাম দাস, পূজা উদযাপন পরিষদ বন্দর থানার সাংগঠিক সম্পাদক রিপন দাস, রামধন দাস ও রঞ্জিত দাস। ধর্মীয়-সামাজিক-সাংস্কৃতিক কোনো অনুষ্ঠানে তাদের যেতে দেওয়া হয় না। সমাজে কথা বলাও নিষেধ। একই কারনে ধীরেন চন্দ্র দাসকে বের করে দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত কমিটি থেকে।
ধীরেনের স্ত্রী সাগরী জানান, কয়েক মাস আগে বাড়ির টিউবয়েলটি নষ্ট হয়ে যায়। পাশের বাসা থেকে জল নিচ্ছিলেন তারা। কিন্তু মনিরাম দাস ও রিপন দাস তাদের হুমকি দেন, ওদের জল দিলে তাদেরও একঘরে করা হবে। এই ভয়ে জল দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক আত্মীয়ের বাসায় গীতাপাঠের নিমন্ত্রণ দিলে ওই পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়, তারা গেলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। ওরা নিমন্ত্রণ ফিরিয়ে নেয় ।
ধীরেনের ছেলে দুলাল দাসকে মাদক দিয়ে ফাসানো হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রিপন দাস পুলিশের সোর্স। দুলাল জানান, সুযোগ বুঝে তাদের দোকানে ইয়াবা রেখে তাকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেন রিপন। ইসকন মত গ্রহন করায় তাকে দুই মাস জেল খাটতে হয়েছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা বিভাগের (দক্ষিণ) সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, এটি আইনের চরম লঙ্ঘন এর বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
নারায়নগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কামতাল ফাঁড়ির ইনচার্জকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হরেকৃষ্ণ সূত্র Narayanganj TV