এই পোস্টটি 155 বার দেখা হয়েছে
স্নান করতে খুব দেরি হয়ে গিয়েছে। তাই মায়ের কাছে অনুরোধ করলেন, আহার দিয়ে দিতে। খাওয়া হয়ে গেলে স্নান করবেন। ব্যাস! মা খুব রেগে বকাঝকা শুরু করলেন। এরকম অনিয়ম করলে শরীর খারাপ হয়ে যেতে পারে বলেও সতর্ক করলেন তিনি। এমন ঘটনা বহু বাড়িতে হয়েই থাকে। খাওয়ার পর স্নান করার জন্য গুরুজনরা বকাঝকা করেননি, এমন ঘটনা বিরল। অনেকে আবার রাতের খাবার খাওয়ার পর হালকা গরম পানিতে স্নান করতে পছন্দ করেন। তাতে তাদের রাতের ঘুম ভালো হয় বলে মনে করেন তারা। কিন্তু এটি নিয়েও অনেকে আপত্তি তোলেন। তাদের মতে, খাওয়ার পর কখনোই স্নান করা উচিত নয়। এই দাবির কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে?
চিকিৎসকরা খুব একটা খাওয়ার পর স্নানের পক্ষপাতী নন। কারণ ভারী কোনো খাবার খেলে তা হজম করার জন্য শরীরে যে ধরনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, তাতে স্নান করলে পেশিতে টান ধরার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে। খাওয়ার পর আর কী কী অসুবিধা হতে পারে জেনে নিন।
ব্যস্ততার জন্য সময়মতো স্নান করতে পারেন না অনেকে। দেখা যায় খাওয়ার পর স্নান করেন কেউ কেউ। এতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চলুন জেনে নেওয়া যাক কী কী শারীরিক অসুবিধা হতে পারে।
চিকিৎসকরা খাওয়ার পর স্নানের খুব একটা পক্ষপাতী নন। কারণ ভারী কোনো খাবার খেলে তা হজম করার জন্য শরীরে যে ধরনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, তাতে স্নান করলে পেশিতে টান ধরার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।
খাওয়ার পরে স্নানে ‘মারাত্মক বিপদ’
খাওয়ার পর অনেকেই স্নান করেন। কিন্তু জানেন কি, খাওয়ার পর ভরা পেটে স্নান কতটা ক্ষতিকর? খাবার হজমের জন্য শরীরে নির্দিষ্ট তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। ঐ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় আমাদের পরিপাক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে ক্রিয়াশীল হয়। কিন্তু খাবার পরই স্নান করলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যায়। এ কারণে বিঘ্নিত হয় আমাদের হজম প্রক্রিয়াও। ফলে গ্যাস-অম্বল এবং বদহজম থেকে শুরু করে বুকজ্বালা ও বারবার ঢেকুরের সমস্যা দেখা দেয়। দীর্ঘদিন ধরে খাওয়ার পর স্নানের অভ্যাস ভবিষ্যতে হজমের গুরুতর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এসব সমস্যা এড়াতে ত্যাগ করুন খাওয়ার পর স্নানের অভ্যাস।
এছাড়া শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হঠাৎ পরিবর্তন ঘটলে তা আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করে। রক্তচাপের আকষ্মিক ওঠা-নামার সঙ্গে সঙ্গে হার্টের সমস্যার ঝুঁকিও তৈরি হয়। চিকিৎসকরাও তাই খাবার আগেই স্নান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আর একান্তই যদি সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে খাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা পর স্নান করুন।
১. খাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়। এতে শরীরের হজম প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বেশি মাত্রায় রক্ত চলাচল শুরু হয়। এতে হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে। ভরা পেটে সেই অনুভূতি খুব একটা সুখকর হয় না।
২. খাওয়ার পর স্নান করলে শরীর বিভ্রান্ত হয়ে যেতে পারে। হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যাওয়ার কারণে শরীরে ক্লান্তি আসতে পারে।
৩. যদি বেশি ফ্যাট বা রিফাইন করা কার্বোহাইড্রেট বা অতিরিক্ত ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়ার পর স্নান করেন, তাহলে হজম প্রক্রিয়া আরো ধীর হয়ে গিয়ে পেটে গ্যাস হতে পারে।
৪. অন্যদিকে হালকা গরম পানিতে স্নান করলে শরীরে ‘হাইপারথার্মিক অ্যাকশন’ হতে পারে। যার ফলে শরীরের তাপমাত্রা এক বা দুই ডিগ্রি বেড়ে যেতে পারে। তাতে অবশ্য একদিক দিয়ে শরীরের ভালোই হয়। শরীরে প্রতিরোধ শক্তি কাজ করা শুরু করে, স্নায়ু ব্যবস্থা রিল্যাক্স হতে সাহায্য করে এবং শরীরে ঘামের গ্রন্থিগুলো কাজ করে। তাই শরীরের দূষিত পদার্থগুলি বেরিয়ে যায়।
৫. এত সব ঝামেলা না করে তাই খাওয়ার অন্তত ২০ মিনিট পর স্নান করা উচিত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
খাওয়ার পর স্নান করলে শরীর বিভ্রান্ত হয়ে যেতে পারে। স্নানের ফলে যেহেতু শরীরের তাপমাত্রা এমনিই বেড়ে যায়, তাই হজম প্রক্রিয়ার জন্য বাড়তি রক্তের সরবারহ নাও হতে পারে। এতে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে গিয়ে শরীরে ক্লান্তি আসতে পারে। কী খাচ্ছেন সেটাও অবশ্য এ ক্ষেত্রে জরুরি। যদি বেশি ফ্যাট বা রিফাইন করা কার্বোহাইড্রেট বা অতিরিক্ত ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়ার পর স্নান করেন, তাহলে হজমপ্রক্রিয়া আরো ধীর হয়ে গিয়ে গ্যাস বা অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে যদি এই যুক্তি অনুযায়ী বিচার করা হয়, তা হলে স্যালাড বা ফল খাওয়ার পর স্নান করলে তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
খাওয়ার কতক্ষণ পর স্নান করা নিরাপদ
খাওয়ার ঠিক কতক্ষণ পর স্নান করলে শরীরের রক্ত চলাচলে সমস্যা হবে না, তা নিয়ে সে ভাবে কোনো গবেষণা হয়নি। কিন্তু স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি বলে, অন্তত ২০ মিনিট বিরতি রেখে তবেই স্নান করা উচিত।