আমাদের খারাপ কর্মের জন্য কি ভগবান দায়ী?

প্রকাশ: ৩ জুলাই ২০২৪ | ৮:৪৩ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৩ জুলাই ২০২৪ | ৮:৪৩ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 151 বার দেখা হয়েছে

আমাদের খারাপ কর্মের জন্য কি ভগবান দায়ী?

শ্রীপাদ রাধেশ্যাম দাস


অনেক শিক্ষার্থী বলে থাকে, “আমি ধূমপান করছি, কেননা, ভগবান আমাকে ধূমপান করাচ্ছেন। যা হয় তা সবই ভগবানই করেন। এটা কি সত্য নয়? আমাদের প্রত্যেকটা বিষয় কি ভগবানের উপর নির্ভরশীল নয়? প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদা একজন ছাত্র শ্রীল প্রভুপাদের নিকটে গেল এবং প্রশ্ন করল, “স্বামীজী ভগবান তামাক বৃক্ষ তৈরি করেছেন, তার মানে তিনি কি চাইছেন, আমরা ধূমপান বা মাদকদ্রব্য ব্যবহার করি? তা না হলে তিনি তামাক বৃক্ষ সৃষ্টি করবেন কেন?” উত্তরে শ্রীল প্রভুপাদ বললেন, “ভগবান পৃথিবীতে বিষও সৃষ্টি করেছেন, ধুতুরা ফুলের বিষও তিনি সৃষ্টি করেছেন, তাহলে নিঃসন্দেহে তুমি কেন এটি খেয়ে দেখছ না?” ছাত্রটি আশ্চর্যান্বিত হল এবং উত্তরে বলল, “স্বামীজী যদি আমি বিষ গ্রহণ করি, তবে ত আমি নিশ্চিত মৃত্যুবরণ করব।” প্রভুপাদ বললেন, “হ্যাঁ, তোমার অবশ্যই বোধশক্তি রয়েছে, তুমি চিন্তা করতে পারছো, কোনটি তোমার জন্য উপযোগী এবং অনুপযোগী। ভগবান তোমাকে উভয়ই দান করেছেন, একদিকে ভগবান দুধের ব্যবস্থা করেছেন, ঠিক অন্যদিকে আঙ্গুর রসজাত এলকোহলেরও ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু, তিনি সঠিক বস্তুটি নির্বাচন করতে বলেছেন। কেননা, মানব শরীরে আমাদের বোধগম্য শক্তি রয়েছে। আমরা শাস্ত্রগত দৃষ্টান্তসমূহ যেমন: ভগবদ্গীতা পড়তে পারি, উপলব্ধি করতে পারি এবং সঠিক বস্তুটি বাছাই করতে পারি, যা আমাদের জন্য উপযোগী। তাই, প্রথমত এ দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা কখনোই ভগবানকে দোষারোপ করতে পারি না। কেননা, সুবিধাসমূহ আমরাই কামনা করি এবং কেবলমাত্র ভগবান তা আমাদের প্রদান করেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি একটি পিজা হোটেলে গিয়েছেন এবং খাওয়ার পর একটি বৃহৎ বিল পেয়েছেন। হোটেলম্যানকে তার কারণ জিজ্ঞাসা করতেই তিনি জানালেন, “আপনার বিলটি অত্যন্ত বৃহৎ আকার ধারণ করেছে, কেননা, আপনিই খাবারগুলো গ্রহণ করেছেন।” একইভাবে, আমরাই সুযোগ-সুবিধাসমূহ কামনা করছি এবং ভগবান কেবলমাত্র তা আমাদের প্রদান করছেন। অন্য একটি উদাহরণস্বরূপ, দেখা যায়, একদা একটি ছেলেকে তার বাবা পার্কে নিয়ে গেলেন এবং এক সময় ছেলেটি বাবাকে বলল, সে স্লাইডিং গেম এ চড়তে চায়। বাবা তাকে অনুমতি দিলেন এবং বললেন সে যেতে পারে। কিছু সময় যাবৎ ছেলেটি আনন্দ পেল এবং পরবর্তীতে বিরক্ত হয়ে পড়ল। তাই কিছু সময় পর ছেলেটি আবার তার বাবাকে জানাল, সে সিস্ গেমটিতে চড়তে চায় এবং বাবাও তাকে সম্মতি জানালেন, ছেলেটি সিস্ গেম এ বসল এবং দেখল, অপর প্রান্তে কেউ বসছে না। পরবর্তীতে সে চড়তে গিয়ে, একেবারে মাটিতেই পড়ে গেল এবং সবাই তার দিকে তাকিয়ে হাসতে শুরু করল। সে বাধ্য হয়ে তা পরিত্যাগ করল। একইভাবে, ছেলেটির মত আমরাও জড় জগতে সুখ এবং দুঃখকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি এবং পরবর্তীতে আমরাই আমাদের কার্যদ্বারা শোকাগ্রস্থ হচ্ছি। ভগবান কেবলমাত্র আমাদের কামনা উপযোগী সুবিধা সমূহ প্রদান করছেন। এমতাবস্থায়, কেউ যদি প্রশ্ন করে, “ভগবান কেন আমাদের খারাপ প্রবৃত্তি কার্য সমূহ মেনে নিচ্ছেন? যদি আমি খারাপ প্রবৃত্তিমূলক কাজে লিপ্ত হই, তার উচিত আমাকে বাধা দেয়া।” এক্ষেত্রে একটি ছোট বালকের দৃষ্টান্ত দেয়া যায়, একসময় একটি ছোট বালক একটি দ্রুত ঘূর্ণায়মান পাখাতে তার আঙ্গুল প্রবেশ করাছিল এবং তা লক্ষ্য করে তার বাবা তাকে তার হাতের আঙ্গুল সরিয়ে নিতে বলল, যাতে বালকটি আঘাত না পায়। কিন্তু, ছোট বালকটি কাঁদতে শুরু করল। তা দেখে বালকটির বাবার এক বন্ধু বললেন, পাখাটি বন্ধ করে দিতে এবং ধীরে ধীরে পাখাটির গতি কমিয়ে আনতে। এখন বালকটিকে আঙ্গুল প্রবেশ করাতে বলা হল। ছোট বালকটি তৎক্ষণাৎ পাখাটিতে আঙ্গুল প্রবেশ করানোর ফলে সজোরে আঘাত পেল, ছেলেটি ব্যাথায় আর্তনাদ করে উঠল এবং উপলব্ধি করল, যদিও পাখাটি ধীর গতিতে চলছে এবং এতেই আঙ্গুল দেয়াতে আমার অসহ্য ব্যাথা হচ্ছে। তাহলে যদি আমি চলন্ত ঘূর্ণায়মান পাখায় আঙ্গুল প্রবেশ করাতাম তবে নিশ্চিত আমি হাতের আঙ্গুল সমূহ হারাতাম। তখন থেকেই ছোট বালকটি পাখায় হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতো। এই রূপ, ভগবানও এই জগতে আমাদের বারংবার বিভিন্নভাবে বোঝানোর এবং উপলব্ধি করার সুযোগ দিচ্ছেন যে, খারাপ প্রবৃত্তিগুলো আসলে কী? তা সত্ত্বেও আমরা তা তীব্রভাবে কামনা করি এবং সংকল্প বদ্ধ হই, যেকোন মতেই আমরা তা আকাঙ্ক্ষা করি। তাই এক্ষেত্রেও ভগবান তা আমাদের প্রদান করেন এবং তা হতে আমরা দুঃখ ভোগ করি। পরবর্তীতে এর ফলে আমরা উপযুক্ত শিক্ষা প্রাপ্ত হই। হিন্দিতেও একটি প্রচলিত প্রবাদ বাক্য রয়েছে যে, লাথির ভূত কখনো কথাকে পরোয়া করে না। তাই এক্ষেত্রে আমাদের অনেক সময় অত্যন্ত গভীর ভাবে শিক্ষা লাভ করতে হয়। কিন্তু একই সময়ে ভগবান এক্ষেত্রে কখনোই একজন নির্দয় ব্যক্তি নন। যিনি আমাদের দুঃখসমূহ প্রদান করছেন তিনি বিভিন্নভাবে আমাদের মাঝে প্রকাশিত হন। তিনি আমাদের মধ্যে ভগবদ্গীতা, মন্দির, ভক্ত, হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র, প্রসাদ, পবিত্র নদী যেমন: গঙ্গা, যমুনা, কাবেরী, পবিত্র ভূমি যেমন: জগন্নাথ পুরী, শ্রী রঙ্গম, বৃন্দাবন, দ্বারকা প্রভৃতি দান করেছেন। তবে তিনি আমাদের আর কী প্রদান করতে পারেন? তিনি চান আমরা এগুলোর সুযোগ গ্রহণ করি এবং কীভাবে শুদ্ধ জীবনের কাঠামো গড়ে তোলা যায়, কীভাবে শুদ্ধতর জীবন নির্বাহ করা যায়, ইত্যাদি শিক্ষাসমূহ যদি গ্রহণ করতে করি, তখনই কেবল আমাদের দুঃখ সমূহ আর ভোগ করতে হবে না। আমরা তখন এই জগতেও সুখী হব এবং পরজগতেও আনন্দ লাভ করবো।


কখনোই ভগবানকে দোষারোপ করতে পারি না। কেননা, সুবিধাসমূহ আমরাই কামনা করি এবং কেবল মাত্র ভগবান তা আমাদের প্রদান করেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি একটি পিজা হোটেলে গিয়েছেন এবং খাওয়ার পর একটি ব্যয় বহুল বিল পেয়েছেন। হোটেলম্যানকে তার কারণ জানতে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি জানালেন, “আপনার বিলটি অত্যন্ত ব্যয় বহুল আকার ধারণ করেছে, কেননা, আপনিই খাবারগুলো গ্রহণ করেছেন।” একইভাবে, আমরাই সুযোগ-সুবিধাসমূহ কামনা করছি এবং ভগবান কেবলমাত্র তা আমাদের প্রদান করছেন।


আমরা সকলেই জানি আমরা ভগবানের শুদ্ধ আত্মা। উদাহরণস্বরূপ, এটি ঠিক বৃষ্টির জলের মতো, বৃষ্টির জল যেমন ভূমিতে পতিত হওয়ার আগে পর্যন্ত শুদ্ধতর থাকে, কিন্তু যখনই ভূমিতে পতিত হয় তা বিভিন্ন সংমিশ্রণে মিশ্রিত হয়ে যায়। এর মানে এই নয় যে, বৃষ্টির জল শুদ্ধ নয়। এইভাবেই, এটিকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পরিশোধন করলে আমরা তা থেকে শুদ্ধ জল পেতে পারি। ঠিক তেমনি আত্মাও হল পবিত্র। কিন্তু, এটি বর্তমানে বিভিন্ন অশুদ্ধতার দ্বারা আবৃত হয়ে রয়েছে। যার কারণে এটির ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক রয়েছে। শাস্ত্রে বলা হয়েছে, আমাদের হৃদয়ের দুটি প্রবৃত্তি রয়েছে। যথা: আসুরিক প্রবৃত্তি এবং দৈবী প্রবৃত্তি। উদাহরণস্বরূপ, এটি ঠিক দুটি কুকুরের মতো, আপনি যদি ভালো কুকুরটিকে ভরণ পোষণ করেন তাহলে এটি শক্তিশালী হবে। আর আপনি যদি মন্দ কুকুরটিকে ভরণ পোষণ করেন তাহলে এটিও শক্তিশালী হবে। পছন্দ নির্ভর করে আপনার উপর আপনি কাকে ভরণ পোষণ করবেন। যদি আমরা কৃষ্ণভাবনা গ্রহণ করি এবং ভক্তিমূলক নীতিসমূহ গ্রহণ করি যেমন: কৃষ্ণ প্রসাদ গ্রহণ, হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ, মন্দিরে গমন, ভক্ত সঙ্গ, ভগবদ্‌গীতা অধ্যয়ন করে শুদ্ধ জীবনপ্রণালী সমূহ অবলম্বন করি, তাহলে উপমা স্বরূপ বোঝা যায় আমরা ভালো কুকুরটিকে ভরণ পোষণ করছি। কিন্তু আমরা যদি মদ্যপ, ধূমপায়ী, মাদকাসক্ত, নারী-সঙ্গকারী, হিতাহিত জ্ঞানহীন এবং আহার, নিদ্রা, ভয়, মৈথুন নিয়ে ব্যস্ত লোকদের সঙ্গ করি এবং তাদের আচরণ সমূহ গ্রহণ করি, তাহলে বোঝা যায় আমরা মন্দ কুকুরটিকে ভরণ পোষণ করছি। আমরা যদি পরবর্তীতে এটিকে আরো ভরণ পোষণ করি তবে এটি আরো শক্তিশালী হবে এবং আমরা আরো অধিকতর দুঃখ ভোগ করব। মূলত আমরা কখনোই ভগবানকে দোষারোপ করতে পারি না। কারণ আমরাই তা নির্ধারণ করেছি। আমাদের জীবনে আমরা কি চাই তা আমরাই বাঁচাই করছি। তাই ভগবদ্গীতায় ষোড়শ অধ্যায়ে ভগবান দৈবী সম্পদ এবং আসুরিক সম্পদ বর্ণনা করেছেন। ভগবান ব্যক্ত করেছেন, “হে অর্জুন, তোমার দৈবী সম্পদ রয়েছে,” দৈবী সম্পদ অর্থাৎ দৈবী গুণাবলী এবং অর্জুন সর্বদাই আসুরিক গুণাবলী সমূহ উপেক্ষা করেছেন। আসুরিক সম্পদ অর্থাৎ খারাপ প্রবৃত্তি মূলক গুণ। তা কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধে পরিলক্ষিত হয়, একই স্থানে অর্জুন এবং দুর্যোধন উভয় যুদ্ধ করেছেন, তা সত্ত্বেও এখানে বৃহৎ, ভিন্নতা দর্শন করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, এটি একটি টেপরেকর্ডারের টেপের মতো। যেটির একদিকে টেপটি নির্দিষ্ট গতিতে ঘুরে এবং অন্যদিকের টেপটি অনিদিষ্টভাবে ঘুরতে শুরু করে। উপমাস্বরূপ, অর্জুনও সেই নিদিষ্ট গতির টেপটির মতো, যিনি নির্দিষ্ট বস্তু অর্থাৎ কৃষ্ণকে লক্ষ্য করে তার কার্যসমূহ সম্পাদন করেছেন। তাই তিনি জাগতিক দায়বদ্ধতা নিবৃত্তি পূর্বক বিভিন্ন কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত। তিনি সর্বাবস্থায় পরিশুদ্ধ ছিলেন এবং পরিশেষে ভগবদ্ধামে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। অন্যদিকে দুর্যোধন অনির্দিষ্ট ভাবে জাগতিক বাসনা সমুহ কেন্দ্র করার ফলে অপর্যাপ্ত কাল কর্মবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন কারণ তিনি অধর্মের পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধক্ষেত্রে নেমেছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে পাণ্ডবরা প্রত্যেকেই ধর্মপরায়ন এবং নিষ্ঠাপূর্বক ধর্ম যাজন করতেন। আর তাই তারা কৃষ্ণেরই নেতৃত্বাধীন ছিলেন। কিন্তু দুর্যোধনের যুদ্ধ করার উদ্দেশ্য ছিল যাতে তিনি সমস্ত কিছু ভোগ করতে পারেন এবং পাণ্ডবদের ক্ষতি সাধন হয়। তিনি এমনকি সূচাগ্র ভূমিও পাণ্ডবদের দিতে সম্মত হননি, বরং বিপরীতে তাদের কটাক্ষ করেন যে, “আমি তোমাদের ধ্বংস চাই। আমিই একমাত্র স্বসাগরা পৃথিবীর রাজা হতে চাই। আর তাই সকল আসুরিক প্রবণ রাজারা দুর্যোধনের পক্ষ স্বীকার করেছিলেন। অপরদিকে প্রত্যেক দৈবগুণ সম্পন্ন রাজারা পাণ্ডবদের পক্ষ নেন। সুতরাং, পরবর্তীতে এটি ধর্ম যুদ্ধে পরিণত হল এবং পাণ্ডবরা জয়লাভ করল কারণ তারা কৃষ্ণের নেতৃত্বাধীন ছিল। একই ভাবে, আমরাও যদি ভগবদগীতা হতে শ্রবণপূর্বক কৃষ্ণের নির্দেশনা সমূহ গ্রহণ করি এবং অর্জুনের পদাঙ্ক অনুসরণের মাধ্যমে অর্জুন হতে আমরা শিক্ষা লাভ করতে পারি, তবে আমরাও দৈব গুণাবলী সম্পন্ন হব এবং আসুরিক গুণ সমূহ বিলুপ্ত হবে। এটি কেবলমাত্র দুটি ক্রিয়া দ্বারাই সহজে সাধিত হয়। একটি হলঃ- হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করা এবং ভগবদ্গীতার সিদ্বান্ত সমূহ গ্রহণ করার মাধ্যমে তদানুসারে জীবন নির্বাহ করা। যদি আমরা ভগবানের নাম-কীর্তন তথা হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করি এবং ভগবানের গুণকীর্তন স্বরূপ ভগবদ্গীতা, শ্রীমদ্ভাগবত সমূহ অনুসরণ করি, তাহলেই আমাদের হৃদয় পরিশুদ্ধ হয়ে উঠবে। ভাগবতে বলা হয়েছে নামশ্রুতি মাত্রেন পুমান ভবতি নির্মল,” অর্থ্যাৎ পবিত্র নাম শ্রবণ তথা হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র শ্রবণের দ্বারাই আমাদের চিত্ত শুদ্ধময় হয়ে উঠবে। এর অর্থ, আমাদের হৃদয় পরিশুদ্ধ স্তরে উন্নীত হবে। সুতরাং, উপমা স্বরূপ, ঐ ভাল কুকুরটিই চিরস্থায়ী হবে এবং খারাপ কুকুরটি ধ্বংস প্রাপ্ত হবে। সুতরাং এই প্রক্রিয়ায় আমরা দুটি দিকে গমন করতে পারি, ঊর্ধ্বদিক যেটি কৃষ্ণমুখী এবং নিম্নদিক যেটি মায়ামুখী। যদি আমরা আমাদের লক্ষ্য পারমার্থিকতাই যুক্ত করি, তাহলে আমরা ঊর্ধ্বদিক অর্থ্যাৎ কৃষ্ণের সহিত ভগবদ্ধামে গমন করব। সুতরাং আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে, আমরা বিভিন্ন ভক্তিমূলক কার্যক্রম সমূহতে অংশ নিতে পারছি এবং উক্ত প্রক্রিয়াটি অনুসরণের দরুন আমাদের হৃদয় পরিশুদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে পরিশেষে আমরা নিত্য আন্দনপূর্ণ ভগবদ্ধামে গমন করতে পারব। কিন্তু কোন মতেই আমাদের হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ হতে বিরত থাকা উচিৎ নয়। কেননা জপই হলো ভগবানের সাথে সংযোগের উত্তম মাধ্যম। তাই আমাদের প্রতিদিন “হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে” উক্ত মহামন্ত্রটি জপ করা প্রয়োজন এবং এর মাধ্যমেই আমরা আমাদের মানব জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধন করতে পারব।


ব্যাক টু গডহেড অক্টোবর – ডিসেম্বর ২০১৮ হতে প্রকাশিত

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।