এই পোস্টটি 313 বার দেখা হয়েছে

ছোট আধ চামচ কেশরীর (জাফরানের) সুতো
সাড়ে ৪ কাপ দুধ
বড় ৪ চামচ ঘি
সিকি কাপ কাঁচা আখরোট বাদাম
সিকি কাপ কাঁচা পেস্তা বাদাম
সিকি কাপ কিসমিস
২ কাপ উচ্চ মানের বাসমতী চাল
বড় ১ চামচ এলাচ গুঁড়ো
১টি পাকা আম,
সিকি ইঞ্চি মাপের ডুমো করে কাটা, প্রায় ১ কাপ
১ কাপ মিহি চিনি
একলা কেশরী -রঞ্জর, ঔষধ, সজিগোজার এবং রান্নাঘরের সুগন্ধি- সব ক্ষেত্রেই বিশ্ব জোড়া খ্যাতি পেয়ে এসেছে। প্রাচীন গ্রীসে, গেরুয়া (কেশরীর রঙ) রঙে রঞ্জিত পোশাক ছিল যা বিচারলয়ের মহিলা নেত্রীদের জন্য উপযুক্ত বলে ধার্য করা হত। ভারতে, মানব শরীরে উদরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত ঔষধি হিসাবে, হজমী ক্রিয়ার গোলযোগের চিকিৎসায় ও নারীদের নানারকম ব্যাধির উপশমে কেশরীর স্থান চিরকাল উল্লেখযোগ্য।
মধ্যযুগে ইংল্যাণ্ডে কেশরী এতই বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল যে, সেই সময়ে সারা দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ খাবারেই কেশরী উপাদান অবশ্যই থাকতো। কথিত, রাজা অষ্টম হেনরী তাঁর খাদ্য-তালিকায় কেশরীকে এতই উপভোগ করতেন যে, বিচারশালার মহিলাদের কেশরঞ্জক হিসাবে এর ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিয়েছিলেন।
পৃথিবীর সবচেয়ে দামী মশলা-উপাদান হওয়া সত্ত্বেও, এখনও কেশরী অত্যন্ত জনপ্রিয়। ভারত উপমহাদেশের বহু প্রশংসনীয় অন্নপ্রধান পদেই কেশরী হল এক বিশিষ্ট স্থানাধিকারী উপাদান- যেমন নিম্নবর্ণিত পদটিতে। উৎসব মহোৎসবে বিবিধ প্রধান পদের পাশে একটি উপভোগ্য মিষ্টি পদ হিসাবে যেমন কেশরী ভাত পরিবেশন করা যায়, তেমনি, ভোজের শেষের দিকের পদ হিসাবে, বা ফাঁপানো ক্রীমের সাথেও এই ভাত পরিবেশন করা যায়। এই পদের উৎকর্ষতা নির্ভর করছে ব্যবহৃত চালের উচ্চ মানের ওপর। দেরাদুনের মতো উৎকৃষ্ট বাসমতী চাল বিশেষ উপযুক্ত।
প্রস্তুতির ও রান্নার সময় : ৪৫-৫০ মিনিট
পরিমাণ : ৬-৮ জনের মতো
১। ছোট একটি পাত্রে সাড়ে ৪ কাপ দুধ ও বড় ২ চামচ জলের সাথে জাফরানগুলি মাঝারি আঁচে বসিয়ে দিতে হবে। একবার ফুটিয়ে, আঁচ কমিয়ে, ঢাকনা দিয়ে মিনিট দশেক রেখে দিতে হবে, যাতে জাফরানের রঙ ও সুগন্ধের নির্যাস সম্পূর্ণ বেরিয়ে আসতে না পারে। আঁচ থেকে পাত্র নামিয়ে আলাদা করে রাখতে হবে।
২। বড় পাত্রে মাঝারি আঁচে ঘি গরম করে তাতে আখরোট ও পেস্তা ফেলে দু-এক মিনিট ভেজে লালচে বাদামি করে তুলতে হবে। কিশমিশ যোগ করে ফুলে ওঠা পর্যন্ত ভাজতে হবে। আঁচ থেকে পাত্র নামিয়ে, বাদাম ও কিসমিস গুলি ছেঁকে তুলে নিতে হবে। বাকি ঘি গরম করার পাত্রেই থাকবে। বাদাম ও কিসমিস থেকে সিকি কাপ আলাদা করে রাখতে হবে, সাজানোর জন্য।
৩। ঘি মাঝারি আঁচে আবার বসিয়ে, চাল ও এলাচ দিয়ে, ২ মিনিট নাড়া চাড়া করতে হবে যতক্ষণ না চালের দানাগুলির গাযে ঘি মেখে যাচ্ছে এবং দানগুলি আধা স্বচ্ছ হয়ে উঠছে। চালের মধ্যে দুধ এবং জাফরান মিশ্রিত দ্ধু ঢেলে দিতে হবে। ফুটে ওঠা অবধি সর্বক্ষণ নাড়তে হবে। তারপর আঁচ খুব কমিয়ে, আঁট ঢাকনা দিয়ে ২৫ মিনিট ধরে রান্না হতে দিতে হবে। চাল সিদ্ধ হলে আঁচ থেকে নামাতে হবে।
৪। ১০ মিনিট ঠাণ্ডা হতে দিয়ে, পরিবেশনের সময়ে চামচে করে ভাতগুলি থালায় নামিয়ে, আম টুকরো চিনি, বাদাম ও কিশমিশ দিতে হবে। সরিয়ে রাখা সাজানোর উপাদনগুলি ওপরে ছড়িয়ে কিংবা ফাঁপানো ক্রীম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।