এই পোস্টটি 249 বার দেখা হয়েছে
সূত্র : ইন্টারনেট -অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, যারা অ্যাবরশন বা ভ্রুণহত্যা করে তাদের ধারণা যৌন ক্রীড়ার ফলস্বরূপ গর্ভের শিশুটিকে হত্যা করার মাধ্যমে তারা পুনরায় সেই যৌনসুখ উপভোগ করতে পারবে। কিন্তু, চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক কেন্দ্রগুলো তাদের গবেষণার মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিপরীত মত পোষণ করছে। তাদের গবেষণায় প্রাপ্ত অ্যাবরশনকালীন ও অ্যাবরশন পরবর্তী সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যা সমূহ নিম্নে বর্ণনা করা হল।
অনিয়ন্ত্রিত যৌনসঙ্গের ফল
পূর্ণাঙ্গরূপ প্রাপ্ত হওয়ার পূর্বেই ভ্রুণের গর্ভপাত ঘটান তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকগুণ বেড়ে যায়।” এছাড়া ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনিস্টিউট ‘২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১০০ জন এক্সপার্ট নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে মন্তব্য করেন যে, অ্যাবরশনের ফলে ব্রেষ্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। তাছাড়া অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী গর্ভপাত ঘটান পরবর্তীতে তারা তাদের মলমূত্রের বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। তাদের শারীরিক কাঠামোরও পরিবর্তন দেখা দেয়।
প্রচণ্ড ব্যাথা :- ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি এবং সান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত জে,এ,এম,এ, ইনিস্টিটিউট এর ১২ জন গবেষক বলেছেন যে অ্যাবরশন এবং অ্যাবরশন পরবর্তী সময়ে একজন নারীকে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করতে হয়। এই অসহ্য ব্যাথার চাপ সহ্য করতে না পেরে অনেক নারী মৃত্যুবরণ করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর গবেষণা মতে বিশ্বে জোরপূর্বক কারণে প্রতিবছর ৬৮,০০০ জন নারী মৃত্যুমুখে পতিত হয়। অ্যাবরশন কালীন মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পেলেও পরবর্তীতে এই ব্যথা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে যায় ৷
মানসিক সমস্যা :- মনোবিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, অ্যাবরশনের পর নারীদের মনে হয় যেন তাদের শরীর, মন ■ প্রতিনিয়ত বিদীর্ণ হচ্ছে, তারা যেন মহাসমুদ্র পরিমাণ কিছু একটা হারিয়ে ফেলেছেন। ১৯৮০ সালের পর থেকে এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, অ্যাবরশন পরবর্তী সময়ে মানসিক সমস্যার কারণে নারীদের হাসপাতালে ভর্তির হার অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে ডাঃ ডেভিড রিয়ার্ডন বলেন “অ্যাবরশন এমন কোন সুবিধাজনক চিকিৎসা পদ্ধতি নয় যা একটি নারীকে পরবর্তীতে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন যাপনে সহায়তা করে, বরং উক্ত সময়টি একটি নারীর জন্য অত্যন্ত মানসিকচাপযুক্ত এবং যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে”। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) মতে অ্যাবরশন পরবর্তী বিবিধ মানসিক সমস্যা উল্লেখ করা হল :
১। তীব্র রাগ বা বিদ্বেষ জন্মে ২। তীব্র মনস্তাপ ৩। হতাশা। ৪। দ্বিধাদন্ধে ভোগা ৫। খাদ্যাভাস পরিবর্তন ৬। পুনরায় গর্ভধারণে ভীতি ৭। নিদ্রাহীনতা ৮। অসহায়বোধ 1 একাকীত্ব ১০। ছোট বাচ্চা দেখলে ভয় পাওয়া ১১। অবিশ্বাস জন্মানো ১২। সব সময় ব্যর্থতাভাব ১৩। আত্মহত্যার প্রবণতা। উপরিউক্ত সমস্যাগুলোর আলোকে বলা যায় যে প্রকৃতির বিরুদ্ধে আচরণ করে কেউ কখনো সুখী হতে পারেনি। এক্ষেত্রে আমরা খুবই প্রচলিত প্রবাদ বাক্য ‘যেমন কর্ম তেমন ফল’ কিংবা বহুল প্রচলিত নিউটনের ৩য় সূত্র “প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া রয়েছে” ব্যবহার করতে পারি। কেননা প্রকৃতির ব্যবস্থাপনাটাই সেরকম। যে যে রকম কর্ম করবে প্রকৃতি তার প্রতিক্রিয়া স্বরুপ সে রকম ফলের সৃষ্টি করবে। যদিও নিউটন একজন পদার্থ বিজ্ঞানী ছিলেন এবং বস্তু নির্ভর ৩য় সূত্র প্রকাশ করেছিলেন। তবুও নিউটনের এ সূত্রটি প্রকৃতির কঠোর ব্যবস্থাপনাকেই অনুসরণ করে। তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ এখানে একটি প্রামাণিক ঘটনার আলোকে তুলে ধরা হল। ডাঃ বার্নোথি নেথিনসন একজন গাইনী বিশষজ্ঞ ছিলেন। তার ডাক্তারী জীবনে তিনি হাজারো নারীর অ্যাবরশন সম্পাদন করেছিলেন। অথচ প্রকৃতির এমনই ব্যবস্থাপনা পরবর্তীতে তিনি নিজেই গর্ভপাতের কারণে নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। ‘ঢিলটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়’ এ প্রবাদ বাক্যটি বোধই অ্যাবরশন বিশেষজ্ঞ ডাঃ বার্নোথি নেথিনসনের জানা ছিল না। এতো গেল একজন তুচ্ছ ঘৃণ্য ডাক্তারের কথা। যিনি ‘যেমন কর্ম তেমন ফল’ এই প্রবাদ বাক্যটির স্বীকার। কিন্তু এইরকম লক্ষ লক্ষ জীব প্রকৃতির কঠোর নিয়মের কষাঘাতে জন্ম জন্মান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ প্রকৃতির এই সব নাকানি চোৱানী খেয়ে ওরা ভগৰানকে দোষারোপ করে বলে যে, ভগবান অন্ধ হয়ে গেছে, ভগবান বলতে কেউ নেই, ভগবান নিষ্ঠুর। তারা য তাদের কৃতকর্মের ফলেই প্রকৃতির কঠোর নিয়মে কর্মফল ভোগ করে চলছে তারা তা বিশ্বাস করতে চায় না। অ্যাবরশন বা ভ্রুণহত্যার মাধ্যমে যারা এত নিস্পাপ আত্মাগুলোকে হত্যা করে প্রকৃতির আইনে তাদেরকেও ঠিক একইভাবে গর্ভেই হত্যা হতে হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, শুধুমাত্র মানুষের গর্ভে ভ্রুণহত্যা করা হয় তা নয়, আমরা বিভিন্ন পশু পাখির ভ্রুণ যা ডিম হিসেবে মুখরোচক খাদ্যরূপে খেয়ে থাকি, তাতেও ভ্রুণহত্যা হয়। ঠিক সেইভাবে যারা মানুষ বা বিভিন্ন প্রাণীর ভ্রুণহত্যা করছে এবং হত্যা করতে সহায়তা করছে তারা প্রকৃতির কঠোর নিয়মে আবদ্ধ হয়ে কখনো মানুষের ভ্রুণরূপে বা প্রাণিজ ভ্রুণরূপ ডিম হয়ে প্রতিনিয়তই অসহায়ভাবে হত্যা হচ্ছে। এতো গেলো জন্ম জন্মান্তরে বিভিন্ন অপকর্মের দরুণ ফলভোগ করার ইতিহাস। মৃত্যুর পর অ্যাবরশন বা ভ্রুণহত্যার দরুণ কি রকম নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় তা ভাগবতের আলোকে তুলে ধরা হল
অন্ধ তামিস্র : যে অনিয়ন্ত্রিত যৌনসঙ্গ উপভোগ করছিল, তাকে এই কুণ্ডে যমদূতেরা এমনভাবে প্রহার দিতে থাকে, যে তার বুদ্ধিও নষ্ট হয়ে যায়।
রৌরব : ভ্রুণহত্যারূপ প্রাণীদের হত্যাকারীরা এই নরকে পতিত হয়। এখানে হিংস্র জীবেরা অর্থাৎ পাপী যাদেরকে পূর্বে হত্যা করেছিল তারাই রুরু নামে এক ভয়ংকর জন্তু রুপে জন্ম নিয়ে পাপীকে পীড়া দিতে থাকে ।
তপ্ত ধূর্মী : যে পুরুষ বা নারী অবৈধভাবে সঙ্গ করে সন্তান উৎপাদন করে, তাকে যমদূতেরা এখানে জ্বলন্ত লৌহময় মূর্তিকে আলিঙ্গন করতে বাধ্য করায় ।
পূয়োদ : যে ব্যক্তি নিয়মবিহীন ভাবে যৌন জীবন যাপন করে, তাকে এই নোংরা সমুদ্রে কফ, থুতু, পুঁজ, মূত্র খেতে হয়।
কুম্ভীপাক : যে ব্যক্তি পশুপাখীর ভ্রুণ হত্যা করে রান্না করেছিল, তাকেই এখানে ফুটন্ত তেলের মধ্যে যমদূতেরা পাক করে থাকে।
শ্রীমদ্ভাগবতের তৃতীয় স্কন্দের ত্রিংশতি অধ্যায়ের ২৯৯ শ্লোকে কপিলদেব নামে এক কৃষ্ণাবতার পাপের ফলসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।
যাস্তামিস্রাহ্মতামিস্রা রৌরবাদ্যাশ্চ যাতনাঃ।
অত্রৈব নরকঃ স্বর্গ ইতি মাতঃ প্ৰচক্ষতে।
যা যাতনা বৈ নারক্যস্তা ইহাপ্যুপলক্ষিতাঃ ॥